থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে বান্দরবানে পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। পাহাড় ধসে হতাহতের দুর্ঘটনা এড়াতে এবং পাহাড়ের ঝুঁকিতে মানুষ নিরাপদে সরিয়ে নিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
জানা গেছে, কিছুতেই সরতে রাজি হচ্ছে না এসব লোকজন। জেলার সাতটি উপজেলা ও ২টি পৌর এলাকায় এবং ৩৩টি ইউনিয়নে পাহাড়ের পাদদেশে বাস করছেন এখনো অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও না পাহাড় কেটে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছে এসব পরিবার।
ঝুঁকিতে বসবাসকারীরা জানান, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীরা প্রায় শ্রমিক শ্রেণীর মানুষ এবং যারা ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে তাদের মধ্যে হতদরিদ্র পরিবারের সংখ্যাই বেশি। জীবিকার তাগিদে পাহাড়ের ঢালুতে পাহাড় কেটে তৈরি করা আবাসস্থলগুলোতে কম ভাড়ায় বসবাস করা যায়। তবে বৃষ্টি শুরু হলেই মাইকিং করে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য অন্যত্র আবাসনের ব্যবস্থা করে না দেয়ায় নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে যেতে চান না কেউ। জীবন মৃত্যুকে হাতে নিয়ে পাহাড়কে একমাত্র সহায় হিসেবে সাথে নিয়েছে পাহাড়ের বাসিন্দারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিবছর বর্ষাকালে পাহাড় ধস প্রতিরোধ এবং জনগণকে নিরাপদ দায়িত্বে সরে যেতে কার্যক্রম দেখা গেলে ও বর্ষা শেষে আবার সেই আগের রূপ।
বান্দরবান মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুল ইসলাম জানান, পাহাড় ধস তাৎক্ষনিক ঘটনা মনে হলেও এটি দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়ার ফসল। ভূমিক্ষয়ের মাধ্যমে পাহাড়ে ফাটল তৈরি হয় এবং ধস নামে। পাহাড় ধসের অন্যতম কারণ হচ্ছে-নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটা এবং উপযুক্ত পদ্ধতি অবলম্বন না করে পাহাড়ে চাষাবাদ করায়। তবে পাহাড় ধস বন্ধে বৃক্ষ নিধন এবং পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হবে। তা নাহলে প্রতিনিয়ত প্রাণ হানির ঘটনা আরও বাড়বে।
আনন্দবাজার/টি এস পি