বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নীলফামারীতে রিপোর্ট পেতে বিলম্ব, বাড়ছে সংক্রমন

নীলফামারীতে করোনা উপসর্গ সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করা হলেও ফলাফল মিলছে না একদিনে। জেলায় পিসিআর ল্যাব না থাকায় নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে সময় লাগছে তিন থেকে পাঁচ দিন।  ফলে নমুনা দিয়েও ঘুরে বেড়াচ্ছেন যেখানে সেখানে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংর্স্পশে আসা ব্যক্তিরা নিজে যেমন সংক্রমিত হচ্ছে তেমনি অন্যদেরও সংক্রমিত হচ্ছেন।

 নীলফামারী জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব না থাকায় প্রথম দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নীলফামারী জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হতো। এতে সময় লাগতো একদিন। এরপর নীলফামারীর নমুনা পরীক্ষা শুরু হয় দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। নমুনা সংগ্রহ করে এখানে পাঠানোর পর ফলাফল আসতে সময় লাগছে তিন থেকে পাঁচ দিন। এ সময়ের মধ্যে নমুনা দেয়ার পর সম্ভাব্য করোনা ব্যক্তিরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্তদের শরীরে তেমন উপসর্গ না থাকায় অনেকে বুঝতেও পারছেন না তিনি করোনা পজিটিভ কি না। ফলে ওই ব্যক্তি নিজের পরিবারসহ অন্যদের সংর্স্পশে গিয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন।

জেলায় প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ফলাফল আসে দুই হাজার মানুষের। এতে ২৬৯ জন মানুষের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৬ জন।

নীলফামারীর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন করোনা ব্রিগেডের সমন্বয়কারী নবনীতা চক্রবর্তী বলেন, নীলফামারীতে প্রতিদিনই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। সে তুলনায় পরীক্ষা হচ্ছে খুবই কম। এখন পরীক্ষার আওতা বাড়ানো না গেলে পরিণতি হবে ভয়াবহ। নীলফামারী মেডিকেল কলেজে পিসিআর ল্যাব বসিয়ে নমুনা পরীক্ষার আওতা বাড়ানো সম্ভব।

আরও পড়ুনঃ  করোনা রোগীকে পিপিই পরে যৌন হয়রানি

নীলফামারী সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি সাংবাদিক তাহমিনুল হক ববি বলেন, পরীক্ষার আওতা বাড়ানো না গেলে সংক্রমণ ঠেকানো কঠিন হবে। জেলার ২০ লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে গত তিন মাসে করোনা ভাইরাস শনাক্তের জন্য প্রায় তিন হাজার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ফলাফল এসেছে দুই হাজার। যা জেলার জনসংখ্যার তুলনায় নগন্য।
সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মন বলেন, প্রথমদিকে আমাদের নমুনা পাঠানোর একদিনের মধ্যে পরীক্ষা হয়েছে। দিনে দিনে সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলাফল আসতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। দিনাজপুরে বিলম্বের কারণে আমরা গত পাঁচ দিনের নমুনা ঢাকায় পাঠিয়েছি। জেলায় ল্যাব হলে এখানেও প্রতিদিন ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। সে ক্ষেত্রে বেশি বেশি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।

জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, এখন সব জেলার মানুষ চায় তাদের জেলার নমুনা পরীক্ষা আগে হোক। এ অবস্থায় ল্যাবগুলোতে অনেক নমুনা জমা থাকছে। আমাদের জেলায় যদি একটা পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা যেত, তাহলে সমস্যা অনেক কমে যেত। যেহেতু আমাদের একটা মেডিকেল কলেজ আছে সেখানে ল্যাব স্থাপন করা যেতেই পারে। অনতিবিলম্বেই পিসিআর ল্যাব স্থাপনের ব্যাপারে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

আনন্দবাজার/শহক/ মনন

সংবাদটি শেয়ার করুন