করোনাভাইরাসের কারণে বিপদে আছে দেশের নিম্নআয়ের মানুষেরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রতিবন্ধীরা। দেশের ৭৪ শতাংশ প্রতিবন্ধীরই আয়-উপার্জন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনোভিশনের এক প্রতিবেদনেও এ তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০০ জন প্রতিবন্ধীর ওপর চালানো জরিপে চালিয়ে এ তথ্য উঠে এসেছে ‘কভিড-১৯ ইমপ্যাক্ট অন ভালনারেবল গ্রুপস: পিপল উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিস (পিডব্লিউডি)’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিড-১৯-কে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশই মানবেতর দিনযাপন করছে। তবে সবচেয়ে সংকটে দিন কাটাচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারগুলো। এর মধ্যে যেসব হতদরিদ্র পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য প্রতিবন্ধী, সেসব পরিবারের সংকটের তীব্রতা অনেক বেশি।
প্রতিবন্ধী পরিবারগুলোয় অর্থের অভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই ধরনের সমস্যা প্রকট—ঋণগ্রস্ততা ও অপুষ্টি। এ দুই সংকট সামনের দিনগুলোয় প্রতিবন্ধী সদস্যবিশিষ্ট পরিবারগুলোর সমস্যাকে করে তুলতে পারে আরো জটিল।
জরিপে অংশ নেয়া ৪৬ শতাংশ প্রতিবন্ধীই ঋণগ্রস্ত । ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে এসব ঋণ নিয়েছেন তারা। এর মধ্যে ৭ শতাংশ প্রতিবন্ধীর ঋণের পরিমাণ ১ থেকে ৭ লাখ টাকার মধ্যে। ৯ শতাংশের ঋণের পরিমাণ ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে এবং ৮৫ শতাংশের ঋণ ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে।
প্রতিবন্ধীদের নিয়ে গবেষণা করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, সব হতদরিদ্র পরিবার এক নয়। যেসব হতদরিদ্র পরিবারে প্রতিবন্ধী রয়েছে, সেসব পরিবারে সংকটের তীব্রতা অনেক বেশি। গবেষণার কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, প্রতিবন্ধী এসব পরিবার প্রায় সব দিক থেকে অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার। করোনার এ সময় সে সংকট আরো বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস