শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনার অপবাদে মা-মেয়ের স্থান হয়েছে নদীর পাড়ে

করোনায় যখন মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে, ঠিক তখনই চার মাস বয়সী এক শিশুর সঙ্গে ঘটেছে অমানবিক ঘটনা। নারায়ণগঞ্জের  এক পোশাককর্মী তার শিশুসন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পর নিজ শ্বশুরবাড়িতে জায়গা হয়নি তার।

ইউপি সদস্যের চাপিয়ে দেওয়া অমানবিক সিদ্ধান্তে তাদেরকে গ্রাম থেকে বের হয়ে যেতে হয়। ফলে মা ও শিশুর এখন রাত কাটছে গ্রামের বাইরে নির্জন নদীর ধারে খোলা আকাশের নিচে। এমন নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে কলাপাড়ার পার্শ্ববর্তী তালতলী উপজেলার শারিকখালী ইউপির চাউলাপাড়া গ্রামে।

জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল ফতুল্লা থেকে শিশুকন্যা আফসানা ও স্বামী মামুনকে নিয়ে নিজ শ্বশুরালয়ে এসে পৌঁছান পোশাককর্মী শিরিনা আক্তার (২৫)। তারা বাড়িতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নিজাম আকন। শিশুটির কথা জানিয়ে শাশুড়ির রান্না করা ভাত খেয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবেন বলে অনেক অনুরোধ করা হলেও মন গলেনি পাষণ্ড ইউপি সদস্যের।

এরপর চৌকিদারের মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে গ্রাম থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে পাশের কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউপির কাঁঠালপাড়া গ্রামের নদীর ধারে একটি পরিত্যক্ত জায়গায় আশ্রয় নেন মা ও শিশুটি। পরে শ্বশুরের সহায়তায় একটি মাদুর ও রান্না করে খাওয়ার হাঁড়ি-পাতিলের ব্যবস্থা করেন শিরিনা।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে গত ১০ দিন ধরে মা ও মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন অমানবিক ঘটনার বর্ণনা দেন শিরিনা আক্তার। তিনি অভিযোগ করেন, তার কোনো ধরনের করোনা উপসর্গ না থাকলেও তাকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে শুধু প্রভাবশালী মেম্বারের ভয়ে। কেন তাকে নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়নি, সরকারের কাছে এমন প্রশ্ন রেখেছেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  বুলবুলের চেয়ে আম্পানের তাণ্ডবে সুন্দরবনে ৩ গুণ বেশি ক্ষতি

এ ব্যাপারে ঐ ইউপি সদস্যের সঙ্গে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, যেহেতু কলাপাড়ার সীমানায় রয়েছে তারা, অবশ্যই খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন