ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে কোনো ভেন্টিলেটর নেই, জানা নেই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

করোনা ভাইরাস (কোভিড ১৯) এর থাবায় লণ্ডভণ্ড পুরো বিশ্ব।বাংলাদেশেও প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। দেশে যে কয়েকটি জেলায় করোনার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে কক্সবাজার জেলা তার অন্যতম।

বিষয়টি স্বীকারও করে নিয়েছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও সংশ্লিষ্টরা। সে বিবেচনায় সম্ভাব্য আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সেবায় কক্সবাজারকে সেভাবেই প্রস্তুত করা হয়েছে দাবি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের।

কিন্তুু বাস্তবতা বলছে অন্য কথা। কক্সবাজার জেলার জন্য একটি ভেন্টিলেটর এর ব্যবস্থা করা হয়নি। অথচ জেলায় প্রায় ত্রিশ লক্ষ জনগোষ্টীর পাশাপাশি দশ লাখের অধিক রোহিঙ্গাসহ ৪০লাখ মানুষের বসবাস। তার উপরে বিপুল সংখ্যক বিদেশিদের উপস্থিতি রয়েছে কক্সবাজারে।

ভেন্টিলেটর না থাকায় সম্ভাব্য রোগীর চিকিৎসা সেবা নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকরাও। চিকিৎসকদের মতে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর সবচেয়ে বেশি জরুরি। আক্রান্ত হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে রোগীর অবস্থা এমন পর্যায়ে চলে যেতে পারে যে জীবন বাঁচানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সে সময় ভেন্টিলেটর নামক যন্ত্রটি এক মাত্র করোনা রোগীর চিকিৎসায় ভরসা।

করোনায় আক্রান্ত রোগীর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে রোগীর মস্তিষ্ক ও হৃদপিণ্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গও অচল হয়ে যেতে পারে। এই জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে এক মাত্র ভেন্টিলেটর।

কক্সবাজারে ভেন্টিলেটর না থাকায় সামাজিক পর্যায়ে সংক্রমণ ব্যাপক আকার ধারণ করলে- বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি হবে বলে আশংঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।

সেভ দ্যা চিলড্রেনের রোহিঙ্গা রেসপন্স অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার অ্যাথেনা রায়বার্ন গণমাধ্যমকে বলেন, “কক্সবাজারে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বা আইসিইউ সুবিধা না থাকায় গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ১৫০ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম নিয়ে যেতে হতে পারে। এতে রোগীদের পাশাপাশি অন্যদের ঝুঁকি আরও বাড়বে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহবুবুর রহমান বলেন, কক্সবাজারে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর এর ব্যবস্থা থাকা উচিত ছিল। কিন্তু এ মুহুর্তে জেলায় সরকারি বা বেসরকারি কোথাও একটিও ভেন্টিলেটর নেই। তিনি ভেন্টিলেটরের জন্য যে সেটআপের দরকার তা নিয়ে নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন। এর পরও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ জানিয়েছেন বলে জানান সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান।

বিষয়টি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এর নজরে আনা হলে তিনি প্রথমে ভেন্টিলেটর নিয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরে মন্ত্রী নিজেই এ প্রতিবেদকের কাছে ফোন করে জানতে চান কক্সবাজারে যে ভেন্টিলেটর নেই এটি নিশ্চিত কিনা? মেডিলকেল কলেজে খবর নিয়েছি কি না? এক পর্যায়ে ভেন্টিলেটর এর বিষয়টি দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

এদিকে কক্সবাজারে এখনো পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা একজন। তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, কক্সবাজার মেডিল কলেজ এর পিসিআর ল্যাবের ২ এপ্রিল থেকে ১১এপ্রিল পর্যন্ত ১৪৫জনের নমুনা টেস্ট করা হয়েছে। তাদের সবার রিপোর্ট নেগেটিভ পাওয়া গিয়েছে।

আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন