গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলায় প্রথম বারের মতো করোনা ভাইরাসে ( কোভিট-১৯) আক্রান্ত একজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত ওই ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৩৪ বছর। সে উপজেলার দস্যু নারায়নপুর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। এদিকে আক্রান্ত ওই যুবক স্থানীয় ছোঁয়া এগ্রো ফিড লিমিটেড কারখানার সুপারভাইজার।
এদিকে করোনা রোগী শনাক্ত হবার পর থেকে ওই কারখানাসহ দস্যু নারায়নপুর গ্রাম লকডাউন ঘোষনা করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীতে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সরকারের রোগতত্ত, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর পক্ষ থেকে জানা যায়, দেশে গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৯৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। কাপাসিয়ার আক্রান্ত যুবক তাদের মধ্যে একজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সালাম সরকার ‘দৈনিক আনন্দবাজার’কে জানান, আক্রান্ত যুবক মাথা ব্যাথার উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসে। তখন তার অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে সন্দেহ হলে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকার আইইডিসিআর এ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আজকের ঘোষিত ফলাফলে তার নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজেটিভ আসে। বর্তমানে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। একই সাথে ছোঁয়া এগ্রো ফিড লিমিটেড কারখানা লকডাউন ঘোষনা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এগ্রো ফিড লিমিটেড কারখানায় প্রায় ১২০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করতো। তার পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। আগামীকাল প্রথমে আক্রান্ত ওই রোগীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হবে। পর্যায়ক্রমে কারখানার সমস্ত শ্রমিক এবং সে যেসব মানুষের সঙ্গে মিশেছে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে।
তিনি আরো জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে। তবে আপাতত ওই কারখানা লকডাউনের আওতায় থাকবে এবং আক্রান্ত ওই ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে এবং বাড়িতে লাল নিশান টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম ‘দৈনিক আনন্দবাজার’ কে জানান, আক্রান্ত যুবকের কর্মস্থল ও তার বাড়ি এবং আশ-পাশের ১০ বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ওই বাড়িটিতে লাল পতাকা টানানো হয়েছে। সেখানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস.এম তরিকুল ইসলাম জানান, একজন শ্রমিকের রিপোর্ট পজেটিভ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কারখানা ও দস্যু নারায়নপুর গ্রামটিকে পুরোপুরি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল ওই কারখানার সকল শ্রমিকদের নমুনা সংগ্রহ করে তারপর পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে। তার পূর্বে যেন কোন শ্রমিক বাইরে যেতে না পারে তার জন্য সেখানে লকডাউন করে পাহাড়া বসানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে নিজ নিজ ঘরে থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনকে সহায়তা করার অনুরোধ জানান।
আনন্দবাজার/শাহী