চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দঘোনায় ভারত থেকে ঢাকা হয়ে ১৩ দিন আগে অরুণ মল্লিক নামের এক লরি চালক তাঁর নিজ বাড়িতে আসেন। সপ্তাহ খানেক ধরে সে জ্বর, কাশি ও গলাব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমন খবরে ‘করোনাভাইরাস’ সন্দেহে এলাকার মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন ওই বাড়িতে গিয়ে লরি চালকসহ বাড়ির সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার আহ্বান জানান।
এছাড়া ওই বাড়ির আশেপাশের আরও ৪ বাড়িকে প্রশাসনের নজরদারিতে রাখা হয়েছে, তবে লকডাউন নয়। এ ঘটনায় কাউকে আতঙ্কিত বা গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ইউএনও।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অরুণ মল্লিক একজন লরি চালক। সে দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ-ভারত নেপালসহ সার্কভুক্ত দেশে লরি পরিবহণে মালামাল পরিবহণ করে আসছে। গত ২২ মার্চ সে ভরত সংলগ্ন নেপাল থেকে লরি চালিয়ে ঢাকা হয়ে বাড়ি ফেরেন। এসময় তার শরীরে জ্বর সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরে গত বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দিনগত রাত ৯ টার দিকে তিনি চন্দ্রঘোনা দোভাষী বাজারে ডা. জেমস ও চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং এর স্মরণাপন্ন হন। তখন তার সর্দি-কাশিসহ শরীরে জ্বরের তাপমাত্রা ছিল ১০১ ডিগ্রী।
এ খবরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে গতকাল শুক্রবার (৩ এপ্রিল) সকালে প্রতিবেশীরা উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ জনপ্রতিনিধিরা রোগীর বাড়িতে যান। এসময় ওই বাড়ির সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার আহ্বান জানান তারা। সেনাবাহিনী তার বাড়িসহ পার্শ্ববর্তী ৪টি বাড়ির লোকজনকে ঘর থেকে বের না হতে নোটিশ জারি করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের ২জন চৌকিদার সার্বক্ষণিক পাহারা দিচ্ছেন যাতে সেখানে কেউ যাতায়াত করতে না পারে।
চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং বলেন, ‘অরুণ মল্লিকের শরীরে করোনা ভাইরাসের লক্ষন থাকলেও তার গলায় আগে থেকে টনসিল ও মামসের সমস্যা থাকায় করোনা পরীক্ষা না করা পর্যন্ত নিশ্চিত কিছু বলা যাবেনা।’
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ভারত ফেরত লরি চালক ব্যক্তিকে নিজ বাড়ি থেকে বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। তার বাড়িসহ পার্শ্ববর্তী ৪টি বাড়িতে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি, তবে লকডাউন নয়। আজ রোগীর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সবাইকে দায়িত্বশীল হবার অনুরোধ জানান তিনি। তবে ভারত ফেরত ব্যক্তির স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবিষয়ে কাউকে আতঙ্কিত বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।’