শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব রেকর্ড গড়তে ২৮ ফুট কলম বানালেন হায়দার

বিশ্ব রেকর্ড গড়ে গিনেজ বুকে বাংলাদেশ ও নিজের নাম লেখাতে ২৮ ফুট দৈর্ঘ্যর একটি বলপয়েন্ট কলম তৈরি করেছেন আব্দুল্লাহ আল হায়দার নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক যুবক। ৭৮ কেজি ওজনের এই কলমের দৈর্ঘ্য ২৭ দশমিক ৮ ফুট ও প্রস্থ ১৮ ইঞ্চি। সেগুন গাছ দিয়ে তৈরি করা কলমটিকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ কলমের স্বীকৃতি দিতে ইতোমধ্যে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদনও করেছেন তিনি। স্বীকৃতি পেতে হলে গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষের ৬১টি শর্ত পূরণ করতে হবে হায়দারকে। যদিও, তিনি বলছেন গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষের সবগুলো শর্তই পূরণ করেছেন তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামের মৃত শরীফ আব্দুল্লাহ হারুণের ছেলে আব্দুল্লাহ আল হায়দায়। তার পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনিই সবার ছোট। হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করে এখন বাড়িতেই সময় কাটে তার।

বাড়ির ছাদের উপরেই তিনি কলমটি তৈরি করেছেন। গোটা কলমটিতে আরবি হরফে খোদাই করে লেখা হয়েছে আল্লাহর পবিত্র ৯৯টি নাম ও পবিত্র কোরআন শরীফের ১১৪টি সুরার নাম।

হায়দার নিজেই আরবি হরফে নামগুলো খোদাই করেছেন। আর কলমের নিপ তৈরিতে তাকে সাহায্য করেছেন মাস্টার ক্রাফটম্যানশিপের হেড ট্রেইনার জাহিদ হোসেন। আর আরবি হরফে লেখাগুলো যাচাইয়ে সহযোগিতা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিরামপুর উত্তরপাড়ায় অবস্থিত মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক নজরুল ইসলাম বিন সাইদ এবং সদর উপজেলার নরসিংসার এলাকার জোবায়দা খাতুন মহিলা মাদরাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

হায়দারের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২ জানুয়ারি তিনি কলমটি তৈরির কাজ শুরু করেন। এজন্য গ্রামের পার্শ্ববর্তী লালপুর বাজার থেকে ২৮ হাজার টাকায় ২৫ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেগুন গাছ কিনে আনেন তিনি। গাছটি বাড়িতে এনে ছাদের উপর রেখে শুকিয়ে দুইভাগ করে কাটেন। এরপর ২৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ও আধা ইঞ্চি প্রস্থের স্টিলের পাইপ স্থাপন করে গাছটি আঠা দিয়ে জোড়া লাগান। কলমটির জন্য ১৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের নিপ বানাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি ওয়ার্কশপে সাতবার চেষ্টা করে অষ্টম বারের মাথায় সফল হন তিনি। ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি কলম তৈরির কাজ সম্পন্ন করেন।

আরও পড়ুনঃ  আমাকে ছেড়ে দিন, আমি দেশ ঠিক করে দেব -সালমান এফ রহমান

হায়দার জানান, বল পয়েন্ট কলম তৈরির করতে ১৫ দিন আরবি হরফে লেখার চর্চা করেছেন তিনি। পরে রাতে কলমের গায়ে আল্লাহর পবিত্র ৯৯টি নাম ও পবিত্র কোরআন শরীফের ১১৪টি সুরার নাম এবং দুটি সুরার চারটি আয়াত আরবি হরফে লিখে খোদাই করেন।

হায়দার আরও বলেন, গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছি যে, ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের হায়দারাবাদের আচার্য মুকুনুরি শ্রীনিভাসা নামে এক ব্যক্তি ৩৭ দশমিক ২৩ কেজি ওজনের সাড়ে পাঁচ মিটার (১৮ দশমিক ৫৩ ফুট) দৈর্ঘ্যের একটি বল পয়েন্ট কলম তৈরি করেছিলেন।

নথিপত্র ঘেটে দেখা গেছে, কলমটিকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ কলম হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আবেদন জানিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ই-মেইল করেন হায়দার। তার ই-মেইলের উত্তরে গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষ আগামী ১২ সপ্তাহের মধ্যে হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে বলে জানিয়েছে।

এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নরসিংসার এলাকার জোবায়দা খাতুন মহিলা মাদরাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, কলমে খোদাই করে আরফি হরফে লেখা আল্লাহর পবিত্র ৯৯টি নাম ও পবিত্র কোরআন শরীফের ১১৪টি সূরার নাম তিনি যাচাই করেছেন। সবগুলো নামই নির্ভুলভাবে লেখা হয়েছে।

আনন্দবাজার/তা.তা

সংবাদটি শেয়ার করুন