ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে খাদ্য সংকটে বানরের দল

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় ক্ষুধার তাড়নায় খাদ্যের খোঁজে দল বেধেঁ ঘুরছে বানর। ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে হানা দিচ্ছে বাড়ি বাড়ি। হাঁট-বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে মানুষের হাঁত থেকে ব্যাগ ছিনেয়ে নিচ্ছে। অপরদিকে বিভিন্ন গাছের ফল-ফলাদি ব্যাপক হারে নষ্ট করছে। কেড়েঁ নিচ্ছে গ্রামের মানুষের গৃহস্থালীর বিভিন্ন জিনিসপএ ও ঘরের খাবারের সামগ্রী। এদিকে বানরগুলোকে তাড়া করলে, বানরগুলো দল বেঁধে হামলা করে আহত করছে সাধারণ মানুষকে।

ছোট ছোট বাচ্চারা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। বিশেষ করে পাহাড়া দিয়ে রাখতে হচ্ছে রান্না ঘর। বানরগুলো সুযোগ বুঝে রান্না ঘর থেকে ভাতের হাঁড়ি নিয়ে ভাত খাচ্ছে। বানরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে গ্রামের সাধারণ মানুষ।

উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের পানবরাইট, বুরুলিয়া, দড়িমেরুণ, তেতুলিয়া এলাকায় তাদের উপদ্রব রীতিমতো আতঙ্কের পর্যায়ে। সরেজমিনে এলাকা গুলেতে ঘুরে দেখা গেছে-বানরের দল এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফালাফি করছে। তাদের এমন খেলা দেখতে বিভিন্ন বয়সের সাধারণ মানুষরা মাঝে-মধ্যেই ভীড় জমাচ্ছেন এলাকাগুলোতে। হাতে কলা,বাদাম, রুটি দেখলেই গাছ থেকে নীচে নেমে আসছে তারা। দর্শনার্থীদের আনাগোনা কমে গেলে দেখা দিচ্ছে বানরের খাদ্যাভাব। তখনই তারা স্থানীয় গ্রামবাসীদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে। সংখ্যায় অনেক বেশি হওয়ায় বানরের অত্যাচারে বাঁধা দিতে ভয় পাচ্ছে গ্রামের লোকজন। প্রচন্ড ক্ষুধার তাড়নায় খাবারের অভাবে অনেক সময় আক্রমণ করে বসছে শিশু ও বৃদ্ধাদের।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে সাবেক সচিব এম.এ কাদের সরকার নিজ উদ্যোগে বানরদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করেছিল। ২/৩ মাস বানরদের রীতিমতো খাবার দেওয়া হয়েছিল। তখন বানরগুলো অনেকটা শান্ত ছিল। এখন খাবার না পাওয়ার কারণে তাদেও আক্রমণের মাএা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের মনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয় বুরুলিয়া গ্রামের খলিল মোল্লা,মতিউর রহমান, শুভল চন্দ্র দাস, দিগেন্দ্র চন্দ্র মন্ডলের সাথে। তারা বলেন, আমরা জন্মের পর থেকেই গ্রামের ভেতর বানরগুলো দেখছি। ক্রমশই তাদের সংখ্যা বাড়ছে। এখন প্রায় ২ হাজারের মতো হবে। তাদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।

তারা আরো বলেন, ধান, চাউল, মুরগীর ডিম, কলা গাছের আধা পাকা কলা, ফল, সবজি কিছুই তাদের জন্য রাখতে পারি না। মাঝে মাঝে ঘরের ভিতরেও ঢুকে পড়ে। রান্না করা ভাতের হাড়ি সুযোগ পেলে ঘর থেকে নিয়ে যায়। বিশেষ করে রোদে ধান শুকানো যায় না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বন বিভাগের সূর্যনারায়ণপুর বিট অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, বন বিভাগের নির্দিষ্ট এলাকায় না থাকার কারণে তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা হচ্ছে না। এ জন্যই তারা লোকালয় থেকে যা পায় তাই খায়। তাদের খাদ্য সংকট রয়েছে।

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ ইসমত আরা বলেন, এ বিষয়ে আমার আগে জানা ছিল না। এতো বানর কাপাসিয়াতে আছে! বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
উপজেলা চেয়ারম্যান এড. আমানত হোসেন খাঁন বলেন, মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য বানরের খাদ্যের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন ।

আনন্দবাজার/এফআইবি

সংবাদটি শেয়ার করুন