শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এশিয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহারে বেশি পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা

এশিয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহারে বেশি পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের নারীরা। গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ) চলতি মাসে ‘দ্য মোবাইল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২৪’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এ প্রতিবেদনে জিএসএমএ বলছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় মুঠোফোনের মালিকানায় নারীরা পিছিয়ে আছেন। বিশেষ করে অস্বচ্ছল, পড়াশোনা না জানা, গ্রামাঞ্চলে বসবাস করা বা বিশেষভাবে সক্ষম নারীরা আরও বেশি পিছিয়ে আছেন।

জিএসএমএ প্রতিবেদনে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ১২টি দেশের তথ্য প্রকাশ করেছে। দেশগুলো হলো- মিসর, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সেনেগাল, নাইজেরিয়া, উগান্ডা, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো ও গুয়াতেমালা। জিএসএমএ গত বছর এসব দেশে জরিপ চালায়। জরিপে ভারত বাদে বাকি ১১টি দেশে ১৫ বছর ও এর বেশি বয়সের এক হাজার নারী ও পুরুষের তথ্য নেয়া হয়েছে। ভারতে দুই হাজার জনের ওপর জরিপ চালানো হয়।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মুঠোফোনে ইন্টারনেট সেবা গ্রহণে নারী-পুরুষের ব্যবধান বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি, ৪০ শতাংশ উল্লেখ করে জিএসএমএ বলেছে, ভারতে এ ব্যবধান ৩০ শতাংশ, পাকিস্তানে ৩৮ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়ায় ৮ শতাংশ। যদিও বাংলাদেশে মুঠোফোনের মালিকানা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে নারী-পুরুষের ব্যবধান সামান্য কমেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ৫০ শতাংশ নারী ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে জানেন। এরপরও তারা তা ব্যবহার করেন না। মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার না করার কারণ হিসেবে সাক্ষরতা ও ডিজিটাল দক্ষতার অভাবের কথা উঠে এসেছে, যা পুরুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এ ছাড়া সামর্থ্য না থাকাও বড় একটি কারণ।

আরও পড়ুনঃ  ইন্টারনেট-ক্যাবল টিভির ধর্মঘট স্থগিত

ইন্টারনেট ব্যবহারে বড় বাধা হিসেবে মুঠোফোনের দাম বেশি উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ইন্টারনেটের বাড়তি দামও বাধা হিসেবে ভূমিকা রাখছে। বিশেষত বাংলাদেশ, কেনিয়া, নাইজেরিয়া ও উগান্ডায় মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য ডেটা প্যাকেজের বাড়তি দাম বড় একটি সমস্যা।

প্রতিবেদন বাংলাদেশে ৮৫ শতাংশ পুরুষ ও ৬৮ শতাংশ নারী মুঠোফোনের মালিক। অর্থাৎ মালিকানায় নারী-পুরুষের ব্যবধান ২০ শতাংশের কাছাকাছি। যদিও সর্বশেষ জরিপের আগের বছর (২০২২) এ ব্যবধান ২১ শতাংশ ছিল। এ ছাড়া দেশে যত পুরুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, নারীর মধ্যে সেই সংখ্যা তার অর্ধেক।

ইন্টারনেট ব্যবহার: দেশে নারীদের অনেকে অন্যের মুঠোফোন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। আবার স্মার্টফোন আছে এমন নারীদের অনেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না। জিএসএমএ বলছে, দেশের ৪০ শতাংশ পুরুষ ও ২৪ শতাংশ নারী মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। এ হার ভারতে ৫৩ শতাংশ ও ৩৭ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ৬৯ শতাংশ ও ৬৩ শতাংশ, পাকিস্তানে ৫৩ শতাংশ ও ৩৩ শতাংশ। মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়ে জানেন দেশের ৩৭ শতাংশ পুরুষ। নারীর মধ্যে এ হার ২১ শতাংশ। তারা মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য। অন্যদিকে, পুরুষের তুলনায় দেশের নারীরা ইন্টারনেট ব্যবহারে আগ্রহী বেশি। জিএসএমএ বলছে, দেশে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নারীর ৫৩ শতাংশ ও পুরুষের ৪৬ শতাংশ আরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান। তবে বৈশ্বিকভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারে নারীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এ–সংক্রান্ত নারী–পুরুষের ব্যবধান গত বছর ১৯ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নেমেছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন