শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেত্রকোণায় ভাতার দাবিতে ইন্টার্ন নার্সদের অনিদৃষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা

নেত্রকোণায় ভাতার দাবিতে ইন্টার্ন নার্সদের অনিদৃষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা

“দাবি মোদের একটাই ইন্টার্ন ভাতা চালু চাই, কর্তৃপক্ষ চুপ কেন জবাব চাই জবাব চাই” এই স্লোগানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কতৃক অনুমোদিত ডিপ্লোমা ইন্টার্ন নার্স এবং ডিপ্লোমা ইন্টার্ন মিডওয়াইফদের ইন্টার্ন ভাতা প্রদানের দাবিতে নেত্রকোণায় ইন্টার্ন নার্সরা অনিদৃষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন।

তাদের দাবি- দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। বাড়ি থেকে টাকা এনে আর চলতে পারছি না। আমাদের ন্যায্য ভাতা দিন।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার বেলা ১২টার দিকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের সামনে মানববন্ধন করেন ইন্টার্ন নার্সরা।

এসময় ডিপ্লোমা পড়ুয়া ইন্টার্ন নার্স ও মিডওয়াইফদের ভাতা আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনিদৃষ্ঠ সময়ের কর্মবিরতি ঘোষণা করেন তারা। এতে জেলা সদর হাসপাতালে ইন্টার্নশিপে কর্মরত ৪৮ জন নার্সিং শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

এসময় তাদের হাতে ‘আমাদের শ্রমের মূল্য দিতে হবে’ আমাদের দাবি ন্যায্য দাবি, মানতে হবে’ কর্তৃপক্ষ চুপ কেন জবাব চাই’ এমন সব প্ল্যাকার্ড তাদের হাতে শোভা পাচ্ছিল।

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইন্টার্ন নার্সেস এসোসিয়েশনের (বিডিআইএনএ) নেত্রকোনা শাখার সদস্য ও ইন্টার্ন নার্স বায়েজিদ আহমেদ, সোহেল মিয়া, মঞ্জুরুল সিদ্দিকী, আকাশ খান, সুবর্না শান্তা, জাফরিন সুলতানা প্রমূখ।

মানববন্ধনে ইন্টার্ন নার্সরা জানায়, আমরা নেত্রকোনা সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে তিন বছর মেয়াদী “ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সাইন্স এন্ড মিডওয়াইফারি” কোর্স সম্পন্ন করে সদর হাসপাতাল ইন্টার্ন নার্স হিসাবে কর্মরত আছি। নিয়মানুযায়ী আমরা ইন্টার্ন ভাতা পাই। কিন্তু বাস্তবে আমাদের কোন ভাতা দেওয়া হচ্ছে না।

আরও পড়ুনঃ  ‘বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা না হলে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হন’

তারা আরও জানায়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজার, বাসা ভাড়া, থাকা-খাওয়া, যাতায়াত, হাত খরচ সব মিলিয়ে প্রতিমাসে একেক জনের ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হয়। পড়াশোনা শেষ করে ইন্টার্নশিপ করা অবস্থায় বাসা থেকে টাকা এনে খরচ করাটা আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। খরচ চালাতে গিয়ে আমাদের পরিবার হিমশিম খাচ্ছে। হাসপাতালে ফুলটাইম ডিউটি করে বাহিরে কোথাও কাজ করারও সুযোগ থাকে না, যেকারণে আমরা কোথাও কাজও করতে পারছি না। এছাড়াও অনেক পরিবার‌ মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত, যেখানে তাদের দিনাতিপাত করাই কষ্টসাধ্য হচ্ছে। সেখানে সন্তানের ইন্টার্নশিপ চলাকালীন খরচ চালানোর জন্য মাসে ৮-১০ হাজার টাকার ভার বহন করাটা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে।

আন্দোলনরত ইন্টার্ন নার্সরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিধি অনুযায়ী ইন্টার্নশিপে কর্মরত নার্সরা অনুপস্থিত থাকলে বেতন কাটার কথা বলা হয়েছে। অথচ আমরা নিয়মিত কাজ করেও কোন বেতন ভাতা পাচ্ছি না।

তাদের দাবি- আমরা দিনভর অক্লান্ত শ্রম দেই অথচ আমাদের কোন ভাতা দেওয়া হয় না। এটা অবিচার।

বেতন ভাতার বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা করেন তারা।

এ বিষয়ে জেলা সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু সাইদ মোহামদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ইন্টার্ন ডিপ্লোমা নাস ও মিডওয়াইফেরা ভাতা পায় কিনা এটি আমার জানা নেই। নার্সিং বিভাগ এ বিষয়ে বলতে পারবে।

সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার রাধা রানী সাহা বলেন, তাদের কর্মসূচির বিষয়ে অবহিত আছি। এ দাবি যৌক্তিক। অন্যান্য ইন্টার্ন নার্সরা ভাতা পায়। তাই ডিপ্লোমা নার্সরাও ইন্টার্ন ভাতা পাওয়ার কথা। নিয়মানুযায়ী ডিপ্লোমা নার্সিংয়ে পড়ুয়া ইন্টার্নশিপে থাকা নার্সরা বেতন-ভাতা পাওয়ার কথা। কিন্তু কেন তারা পাচ্ছে না সেটা জানি না। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ অবহিত আছেন।

আরও পড়ুনঃ  দেশের প্রথম ইস্টিশন পাঠাগার উদ্বোধন

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন