চিরকুটে বড়ভাই ও ভাবীকে নিজের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে নিজ দোকানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রদীপ কুমাব দেব (৪৫) নামের একজন মুদি ব্যবসায়ী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার(২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার সরিষাকোল বাজারে। নিহত প্রদীপ কুমার দেব ওই বাজারের প্রদীপ স্টোরের মালিক ও দুর্গাদহ গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন দেবের ছেলে।
নিহতের স্বজনেরা জানান, মঙ্গলবার সকালে প্রদীপ কুমার বাড়ি থেকে দোকানের উদ্দেশ্যে বের হন। কিন্তু দুপুরে খাবার খেতে বাড়ি না যাওয়ায় স্বজনেরা তার খোঁজ নেয়ার চেষ্ঠা করেও ব্যর্থ হন। পরে সন্ধ্যার দিকে জনৈক ব্যক্তি প্রদীপ কুমারের দোকানের সাটার বন্ধ দেখতে পান, এসময় সাটারে তালা লাগানো ছিলনা। পরে তিনি সাটার তুলে দোকানে প্রবেশ করে দোকান ঘরের ভেতরের সিড়ির উপরে প্রদীপ কুমারের ঝুলতে দেহ দেখতে পায়। এসময় খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে প্রদীপ কুমারের ঝুলন্ত দেহ নামানো হয়। এসময় প্রদীপ কুমারের পরিহীত সার্টের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়, সেখানে ”আমার মৃত্যুর জন্য বড় ভাই মনমোহন কুমার ও ভাবি চায়না রানীকে দায়ী” একই কথা মোট আটবার লেখা ছিল। এবং সেই লেখার নিচে প্রদীপ কুমারের স্বাক্ষর দেয়া ছিল।
জানা যায়, বেশ কিছুদিন যাবৎ প্রদীপ কুমারের সাথে তার বড়ভাই মনমোহন কুমার দেবের সাথে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল এবং তার বড়ভাই মনমোহন কুমার নিজে ও এলাকার প্রভাবশালীদের সহযোগীতায় প্রদীপ কুমারের বসত ঘর ভাঙার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করছিল। এমনই অভিযোগ করে তার স্ত্রী চম্পা রানী বলেন, এই কারণে আমার স্বামী মানুষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিল, তাদের অত্যাচারে তিনি রাতে ঘুমাতেও পারতেন না। তাদের অত্যাচারের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অপরদিকে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মৃধা বলেন, তার পকেটে যে চিরকুট পাওয়া গেছে বড় ভাই ও ভাবিকে অভিযুক্ত করে সেই রকম কোন ঘটনার প্রমাণ আমরা পাইনি। বিভিন্ন এনজিও থেকে ৭/৮ লাখ টাকা ঋণগ্রস্থ্য হয়ে পড়েন এবং তাদের বসতবাড়ী বাটোয়ারার কারণে তার বসতঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সড়ানোর কথা ছিল। ঋণ ও ঘর ভাঙ্গা নিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরার কারনে সে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এবং এই বিষয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা দায়েরের হয়েছে।