শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খানসামায় হঠাৎ বেড়েছে জ্বর-সর্দির প্রকোপ

আবহাওয়ার বেখেয়ালী আচরনে দিনাজপুরের খানসামায় দিনভর কখনো বাড়ছে ভ্যাপসা গরম আবার গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে আবহাওয়ার এমন বৈরি পরিস্থিতিতে কমবেশি প্রতিটি বাড়িতে চলছে সর্দি, জ্বর, কাশিসহ মাথা ব্যাথার প্রকোপ। ফলে কমিউনিটি ক্লিনিকসহ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে এধরনের আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

বিশেষ করে ১ থেকে শুরু করে ১০-১২ বছরের শিশু ও বয়স্কদের মাঝে এমন রোগের প্রভাব পড়ছে বেশি। তবে যে কারণে জ্বর-সর্দি দেখা দিক না কেন অবহেলা না করে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বেশিরভাগ বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত। তাদের বেশির ভাগই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। এভাবে অনেকে সুস্থ হয়েও উঠছেন। আবার কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এছাড়াও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ডাক্তারদের ব্যাক্তিগত চেম্বারগুলোতে এ ধরনের রোগীদের উপচে পড়া ভীড় লেগেই থাকছে।

৪ বছর বয়সী মেয়ে ফারিহাকে পাকের হাটে ডাক্তার দেখানোর পর বাড়ি যাওয়ার সময় তাদের সাথে দেখা হয় আনন্দ বাজারের। এসময় ফারিহার মা উম্মে কুলসুম জানান, আমার মেয়ে দুইদিন থেকে খুবই জ্বর-সর্দি আর কাশিতে ভুগছে তখন আজকে এলাকার ফার্মেসী থেকে ওষুধ এনে খাওয়া হয় কিন্তু তখনও জ্বর কমেনি তাই পাকের হাটে ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে এলাম।

এছাড়াও উপজেলার কয়েকজন অটোভ্যান চালক বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে গাড়ি চালিয়েছি। সকালে প্রচন্ড রোদ আবার বিকেলে ঝুম বৃষ্টি। কখনো ভ্যাপসা গরম আবার হাল্কা ঠান্ডা শরীরে লেগে কয়েকদিন থেকে জ্বর শর্দি নিয়ে ঘুরছি। পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করেও কোন উপকার মিলছে না।

আরও পড়ুনঃ  লাভের বাণিজ্যে খেজুর গুড়

গৃহিনী জোসনা বেগম সকালের সময়কে বলেন,আমার শরীরে গত তিনদিন ধরে জ্বর, সর্দি মাথাব্যাথা, কাশিসহ পুরু শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা। বাড়িতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওষুধ খেয়ে এখন অনেকটা সুস্থ হলেও আমার ৪ বছরের নাতনী টা বর্তমানে জ্বর সর্দির সাথে লড়ছে।

উপজেলার ছাতিয়ান গড় গ্রামের ওষুধ দোকানি খালেদ রায়হান আনন্দ বাজারকে বলেন, গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে সর্দি-কাশি-জ্বরের ওষুধ বিক্রি ব্যাপক বেড়ে গেছে। যা অবস্থা, তাতে মনে হয় এখন ঘরে ঘরে জ্বর। এ ধরনের বেশিরভাগ রোগী বা রোগীর স্বজন চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে তাদের কাছে এসে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা.শামসুদ্দোহা মুকুল আনন্দ বাজারকে বলেন, আবহাওয়া জনিত কারণে হঠাৎ সর্দি-জ্বরের প্রকোপ একটু বেড়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কের কোন কারন নেই। এই সর্দি-জ্বর শুধুমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট খেতে হবে। অযথা দোকান থেকে এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট খাওয়া যাবে না। আর জ্বর হলে অবশ্যই সর্বদা তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে এবং বাসায় রেস্টে থাকতে হবে। আর যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে এসে ডাক্তারদের পরামর্শ নেয়া উচিত।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন