শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে স্ত্রীর মরদেহ রাস্তায় ফেলে পালাল স্বামী!

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় রুমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধুর মরদেহ রাস্তায় ফেলে তাঁর স্বামী পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় রুমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধুর মরদেহ রাস্তায় ফেলে তাঁর স্বামী পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার (২৬ আগষ্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল দক্ষিণ দিঘিরপাড় এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রবিবার (২৭ আগস্ট) ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ফরিদপুরের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

নিহত রুমা বেগম উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল দিঘিরপাড় গ্রামের মো: টোকন মাতুব্বরের স্ত্রী ও মাদারীপুরের রাজৈর উত্তর চাঁনপুট্টি গ্রামের প্রয়াত কুদ্দুস মাতুব্বরের মেয়ে।

নিহত রুমার পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার সকালে রুমার স্বামী টোকন মাতুব্বরের এক ভাগনে হৃদয় মিয়ার মোবাইল থেকে তাদের জানানো হয়, ‘রুমা আত্মহত্যা করেছে’। তাঁর মরদেহ এসে নিয়ে যান। এরপর রুমার স্বামী টোকনকে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও সে ফোন রিসিভ করেনি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার আব্দুল্লাহবাদ বাড্ডায় রুমার ভাড়া বাসায় খুজাঁখুঁজি করেন তারা।

কিন্তু, সেখানেও রুমা ও তাঁর স্বামী-সন্তানদের কোন খোঁজ পাচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে, দুপুরের পর অপরিচিত একটি ফোন থেকে রুমার মামা বাবুলকে জানানো হয় ‘রুমার লাশ এখন ভাঙ্গায় আছে’। তাকে ‘রাস্তার উপরে রাখা হয়েছে, সেখানে গিয়ে লাশ বাড়িতে নিয়ে যান’। তারপর ভাঙ্গায় রুমার শশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় তারা। এসময় পথিমধ্যে তাঁরা দেখেন একটি ব্রিজের উপর ষ্টিলের খাটে চাদর দিয়ে ঢাকা রয়েছে রুমার লাশ। সেখানে রুমার লাশটি একাই পড়ে ছিলো। পরে রুমার শশুরবাড়িতে যান তারা। কিন্তু, বাড়িতেও তাঁরা কাউকে খুজে পায়নি। এরপর থানা পুলিশকে জানানোর পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সন্ধ্যায় মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

আরও পড়ুনঃ  ছেরী বয়স্কভাতা পাইলেও আমি পাই না

রুমার মা ও ছোট বোন জানায়, রুমা তাঁর স্বামী ও তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঢাকার বাড্ডায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে গত এক বছর আগে টোকন কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় আরেকটি বিয়ে করে। পরে কিছুদিন পর তাকে ডিভোর্স দেয় টোকন। কিন্তু, সম্প্রতি সেই বিয়ে করা মেয়ের সঙ্গে টোকনের গোঁপনে যোগাযোগ চলছিল। এই নিয়ে রুমার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো এবং টাকা-পয়সা চেয়েও রুমাকে নির্যাতন করতো টোকন। রুমার মামা বাবুল হোসেন জানায়, তাঁর ভাগ্নির বাম হাত ও পা ভাঙ্গা ছিলো। মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে পরিকল্পিত ও নির্মমভাবে হত্যা করেছে ভাগ্নি জামাই টোকন। এ ঘটনায় আইনগত একটি সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তিনিসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তিনিসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে সন্ধ্যার পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য রবিবার (২৭ আগস্ট) সকালে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন রয়েছে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন