শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলের শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন করার নির্দেশ

স্কুলের শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন করার নির্দেশ

ডেঙ্গু রোগ ঠেকাতে মাধ্যমিক স্তরের সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, প্রতিকার ও প্রতিরোধ বিষয়ে প্রকল্পভিত্তিক শিখন কার্যক্রম বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।

বুধবার (২৩ আগস্ট) পরিপত্র জারি করে প্রকল্পভিত্তিক শিখন কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও মাঠপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

পরিপত্রে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডেঙ্গু রোগ নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ বিষয়ে একটি প্রকল্পভিত্তিক শিখন কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৩০ আগস্টের মধ্যে দুটি সভা আয়োজন করতে হবে।

প্রকল্প নির্দেশিকা:

শিক্ষার্থীরা ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম বিষয়ে সচেতন হওয়ার অনুশীলনের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগের বিস্তার রোধে বিশেষ ভূমিকা পালনে দক্ষতা অর্জন করবে। ষষ্ট শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কার্যক্রমে অংশ নেবে। স্বাস্থ্যবিধি ও সতর্কতা অবলম্বন করে শিক্ষার্থীরা এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।

ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণিতে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষক এবং অষ্ট থেকে দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব পালন করবেন। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দল গঠন, তথ্য সংগ্রহ, তথ্য উপস্থাপন বিষয়গুলো তত্ত্বাবধান করবেন।

সব শিক্ষক এ কার্যক্রমে সহযোগিতা করবেন। প্রধান শিক্ষক সমন্বয় করবেন। এছাড়া পুরো কার্যক্রম সার্বিকভাবে তত্ত্বাবধান করবেন তিনি।

নির্দেশনা:

১) ঘরবাড়ির আশপাশে কোনও জায়গায় জমা থাকা পানি ৩ দিন পর পর ফেলে দিতে হবে এবং ৩ দিন পর্যন্ত যেন কোথাও পানি জমতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১৭০০ ছাড়ালো

২) ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, কমোড, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা/ নারিকেলের মালা, কন্টেইনার, পানির মটকা, ব্যাটারির সেল, পলিথিন/চিপসের প্যাকেট ইত্যাদিতে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। এসব জিনিস বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।

৩) কোনও পাত্রের জমা পানি ফেলে দেওয়ার পর পাত্রের গায়ে লেগে থাকা এডিস মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।

৪) প্রয়োজনীয় ও পরিত্যক্ত পানির পাত্র ধ্বংস অথবা উল্টে রাখতে হবে।

৫) বর্ষাকালে ছাদ বাগানের কোনও টবে যেন পানি জমতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

৬) নির্মাণাধীন ভবনের লিফটের গর্তে পানি জমে মশার বংশবিস্তার করে। লিফট স্থাপনের আগ পর্যন্ত এই গর্ত বালি দিয়ে ভরাট করে রাখতে হবে।

৭) নির্মাণাধীন ভবনের নতুন মেঝে কিউরিংয়ে ব্যবহৃত পানিতে কেরোসিন ছড়িয়ে দিলে বা নোভালিউরোন ট্যাবলেট ছিটিয়ে দিলে মশা বংশবিস্তার করতে পারে না।

৯) ওয়াসার পানির মিটারে জমে থাকা পানিতে মশা ডিম পেড়ে বংশবিস্তার করে, পানির মিটারে মাসে একবার নোভালিউরোন ট্যাবলেট প্রয়োগ করতে হবে।

১১) নোভালিউরোন ট্যাবলেটের জন্য সংশ্লিষ্ট মশক নিয়ন্ত্রণকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে।

১২) দিনে বা রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে, শিশুদের ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে দিবেন।

১৩) এডিস মশা শরীরের খোলা জায়গায় কামড়ায়, তাই যতদূর সম্ভব শরীর ঢাকা থাকে এমন পোশাক পরিধান করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  চতুর্থবারের মতো আইইবির কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান বিডিইউ উপাচার্য

১৪) প্রয়োজনে শরীরের অনাবৃত স্থানে মশা নিরোধক ক্রিম লোশন ব্যবহার করতে হবে (মুখমণ্ডল ব্যতীত)।

১৫) সম্ভব হলে জানালা এবং দরজায় মশা প্রতিরোধক নেট লাগাতে হবে, যাতে ঘরে মশা প্রবেশ করতে না পারে।

১৬) বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়, তাই এ সময় অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

১৭) কেউ জ্বরে আক্রান্ত হলে কাছের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র অথবা মাতৃসদন থেকে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।

নির্দেশনা অনুযায়ী সচেতনতায় শিক্ষার্থীদের করণীয়:

ক) পোস্টার/প্ল্যাকার্ড তৈরি এবং প্রদর্শনের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি;

খ) নির্বাচিত স্থান অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ;

গ) নিজের বাড়িঘর ডেঙ্গু ঝুঁকিমুক্ত রাখা;

ঘ) নিজের বিদ্যালয়, শ্রেণিকক্ষ ডেঙ্গু ঝুঁকিমুক্ত রাখা;

ঙ) ফলোআপ;

চ) প্রতিবেদন লেখা।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন