সারা দেশে বিদ্যুত সংকটে চলছে লোডশেডিং আর অন্য দিকে পড়েছে প্রচন্ড গরম। এই গরমে ঠান্ডা পানীয় শরীর মনে প্রশান্তি এনে দেয়। গরম জিনিস এই সময় এড়িয়ে চলতে চায় সবাই।কিন্তু যাদের চা পছন্দ বা চা ছাড়া একেবারেই চলতে পারেন না আবার তারা খাচ্ছেন চা।
মাথার ওপর কড়া রোদ, কর্ম ব্যস্ত দিন আর কাজের চাপ। বৈশাখেও যখন বৃষ্টি নেই, চার পাশের মানুষ তখন তীব্র গরমে অতিষ্ঠ। স্বস্তির নিঃশ্বাস পেতেও যেন বেশ বেগ পেতে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষকে। তাই গরমে একটু স্বস্তির খোঁজে সাধারণ মানুষের আস্থা শরবতের গøাসে। তাই দাগনভূঞা পৌর শহরে চলছে শরবতের জমজমাট বেচাকেনা। এদিকে শরবতের পরিবর্তে অনেকেই আবার বেছে নিচ্ছেন ডাবের পানি, শশা, অথবা আনারসের মত রসালো ফল। ক্লান্ত শরীরে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে লেবুর শরবত পান করছিলেন এক রিকশা চালক মিরাজ। তিনি বলেন, ‘ গরমে ক্লান্ত হয়ে গেছি। প্রচন্ড গরম! এই শরবতটা পান করলে স্বস্তি আসে, ক্লান্তি চলে যায়।’
এভাবেই সাধারণ মানুষ পথ চলতে ক্লান্তি দূর করতে রাস্তার পাশের শরবত পান করে চলেছেন। শুধু প্রাপ্ত বয়স্করাই নয়, স্কুল পড়ুয়া শিশু-কিশোররাও ভক্ত এ সব শরবতের। আর ক্রেতা আকর্ষণে নানা পদের উপকরণ ব্যবহার করছেন শরবত বিক্রেতারা।
ফিল্টারভর্তি পানি, টেস্টি স্যালাইনের শরবত বিক্রি করছেন আলাদা আলাদা ভাবে চার স্থানে। কেউই বা বিক্রয় করতেন বাজা বাদাম,বুট, ভুট্টা,গরমে বিক্রি কম হওয়ায় বছরের এ সময়টাতে হয়ে যান শরবত ব্যবসায়ী। প্রতিদিন শরবত বিক্রি করে তারা আয় করেন এক থেকে দুই হাজার টাকা।
ব্যবসায়ীদের ভাষায়, বরফঠান্ডা বিশুদ্ধ পানিতে টেস্টি স্যালাইন, লেবু ও লবণ মিশিয়ে তৃষ্ণার্ত মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত শরবত পান করাচ্ছেন। তাদের দোকানের সামনে রীতিমতো ভিড় লেগে গেছে। সিয়াম নামে এক পথচারী শরবতের গøাসে চুমুক দিয়ে বললেন ঘরে লোডশেডিং, বাইরে সূর্যের তাপের গরম। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। স্যালাইনের শরবতে একটু স্বস্তি পেলাম।
ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের ওপর সাজিয়ে বিক্রি করা ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ ও উপকরণের বরফ মেশানো শরবত। রকমভেদে প্রতি গøাস শরবতের দাম ১০থেকে ২০ টাকা।
শরবতের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, শরীর ঠান্ডা রাখার নানা উপকরণ মিশিয়ে শরবতে ভিন্ন স্বাদ আনার চেষ্টা করছেন দোকানিরা। যেমন ইসবগুলের ভুষি, উলটকম্বলের রস ও তোকমার শরবতে মেশাচ্ছেন ইসবগুলের ভুষি, সহ বিভিন্ন ফল ও সঙ্গে বরফজল তো আছেই।
এ ধরণের পানীয় দেহের জন্য কতটা উপকারী তা নিয়ে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার ধারে কিংবা ফুটপাতে যেসব শরবত বা জুস বিক্রি হচ্ছে সেগুলো বেশিরভাগই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। দেখা যায় এগুলো অনেক সময় অপরিচ্ছন্ন থাকে যার কারনে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ হতে পারে। ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস, কৃমি টাইফয়েডসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হন। ক্লান্তি দূর করতে যারা এসব পান করেন তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’
তাছাঢ়া ঝাল জাতীয় খাবারে বিভিন্ন ধরনের মশলা ব্যবহার করা হয় এতে গ্যাস্ট্রিক আলসার সহ অন্যান্য রোগ হতে পারে।
এক বীমা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার জানা মতে ডাবের পানি পান করা নিরাপদ। এটা শরীরের জন্য নিরাপদ। আর এটা পান করলে শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি পায়।’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের পানি বিশুদ্ধ। আর লেবু, মালটা বা চেরি ফলের শরবত পান করা শরীরের জন্য ভালো। যত দিন গরম আছে এই ব্যবসা ভালো হবে বলে আশা করেন ব্যবসায়ীরা।