গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা মজিদপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান আকন্দকে এক নারীর সাথে বদ্ধ ঘরে আটক করে স্থানীয়রা।
সুন্দরগঞ্জ পৌর শহরের আল জবেদ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ওই প্রধান শিক্ষক মান্নান আকন্দের ব্যক্তিগত অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবার বিকেলে ঐ নারীসহ অফিস কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন মান্নান আকন্দ । দীর্ঘ সময় পার হলে বিষয়টি রহস্যজনক ভেবে স্থানীয়রা ঐ কক্ষে তাদেরকে আটক করেন। ঘটনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে গেলে উৎসুক জনতার ভীর জমে। পরে প্রভাবশালী একটি মহলের হস্তক্ষেপে প্রধান শিক্ষক মান্নান আকন্দ রক্ষা পান বলে জানা গেছে।
এনিয়ে একটি ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, আটককারীদের প্রধান শিক্ষক বলেন, দরজা বন্ধ করাটা আমার ভুল হয়েছে। ওই মহিলা আমার পিয়নের মা। পরে দম্ভোক্তি করে বলেন, তোমরা আমাকে চেনো-না! আজকে ৩০ বছর ধরি তোমাদের সাথে থাকি, আর আজকে তোমরা আমাকে চেনো-না। তোমরা ভাবছো অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য দরজা বন্ধ করেছি। চাকরির লেনদেন বিষয়ে আমার সাথে দেখা করতে এসেছে । তবে, আটককারীদের এক প্রশ্নের জবাবে ঐ নারীও ভুল স্বীকার করে বলেন,’ আমার কোন অভিযোগ নাই’।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান আকন্দের মুঠোফোনে কল করা হলে এসব ঘটনা অস্বীকার করে তিনি বলেন, কিছু ছেলেপেলে এমনিতেই এসেছিল ; পরে সমাধান হয়েছে। বদ্ধ ঘরে আপনি নারীসহ কেন? এমন প্রশ্ন করাতে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
এদিকে ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মুঠোফোনে কথা হয় তার স্বামীর সঙ্গে। মহিলার স্বামী জানান, আমার স্ত্রী সুন্দরগঞ্জ গিয়েছিল বিষয়টি জানি না। পাশ্ববর্তী জহুরুলের মোড় এলাকায় যাওয়ার কথা বলে আমার স্ত্রী বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। পরে ওই নারীর সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি জানান, আমার ছেলেকে ঝাড়ুদার থেকে অফিস পিয়ন হিসেবে নিযুক্ত করার বিষয়ে গিয়েছিলাম। খরচ বাবদ কিছু টাকা ওই প্রধান শিক্ষককে দিয়ে এসেছেন বলে জানান তিনি। তবে বদ্ধ ঘরের কথা ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন তিনি।
এব্যাপারে উপজেলা প্রধান শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব খোকন বলেন, ‘ঘটনা টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। বিষয়টি যদি সত্যি হয়, তাহলে এটি অবশ্যই নিন্দনীয় একটি ঘটনা।’
এসব বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মমিন মন্ডল মুঠোফোনে বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি ওই প্রধান শিক্ষককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এখনো কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।