শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ ডাবল লাইন

বদলে যাচ্ছে সেবার মান

বদলে যাচ্ছে সেবার মান

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে চালু হচ্ছে আখাউড়া-লাকসাম ডবল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথ। এই রেলপথ নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে এর উদ্বোধন করবেন বলে কথা রয়েছে।

ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট লোকজনরা জানান, ডবল লাইন চালু হলে গুরুত্বপূর্ণ এ রেলপথে দ্বিগুণের বেশি গতিতে চলবে ট্রেন। সেই সঙ্গে নতুন ট্রেনের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সময় সাশ্রয়সহ যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমে আসবে। ডাবল লাইন রেলপথে বদলে যাবে যাত্রী সেবার মান। এই রেলপথ উদ্ধোধনের খবরে খুশি ট্রেন যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট
লোকজনরা।

আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার রেলপথে ১৯০ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ ও বিদ্যমান লাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তার প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। এই প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা। চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন এবং বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার যৌথভাবে এই প্রকল্পের কাজ করে।

সূত্র মতে, নতুন এ পথে মিটার গেজ ও ব্রড গেজ এ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে। বর্তমানে এই পথে মোট ২৩ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে এ পথ দিয়ে ৭২ জোড়া ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা তৈরি হবে। সেই সঙ্গে মালবাহী কনটেইনার চলাচলেরও সক্ষমতা কয়েক গুণ বাড়বে। ডাবল লাইন নির্মাণ ও বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনের উন্নয়ন প্রকল্পের পুরো টাকার মধ্যে
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ঋণ দিচ্ছে চার হাজার ১১৮ কোটি ১৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এক হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক। আর সরকারের অর্থায়ন থাকছে এক হাজার ২৬ কোটি ৬৬ লাখ ২২ হাজার টাকা।

আরও পড়ুনঃ  এইচএসসি পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডবল লাইন চালু হলে গুরুত্বপূর্ণ এ রেলপথে দ্বিগুণের বেশি গতিতে ট্রেন চলবে। সেই সঙ্গে নতুন ট্রেনের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সময় সাশ্রয়সহ যাত্রী সেবার মান বাড়বে। এদিকে গত ৯ ফেব্রæয়ারি কসবা থেকে মন্দবাগ এবং শশীদল থেকে রাজাপুর সেকশনে ৩২ কিলোমিটার রেলপথ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ডাবল লাইন ট্রেন অপারেশন উদ্বোধন করা হয়। আর বাকি অবশিষ্ট ডুয়েল গেজ রেলপথ বৃহস্পতিবার উদ্ধোধন হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আখাউড়া-লাকসাম ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়্যালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন। এ উপলক্ষে কুমিল্লার লাকসামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কথা। এর মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলথের ৩২১ কিলোমিটারে আর কোনো ক্রসিং থাকবে না। যে কারণে ট্রেনের পরিচালন সময় ২৫
থেকে ৪০ মিনিটের মতো কমে আসবে। কয়েকজন ট্রেন যাত্রী বলেন, আগে সিঙ্গেল লাইন থাকাতে ট্রেনের জন্য যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। ডাবল লাইন চালু হলে ট্রেনের
যাত্রীরা নানা ধরনের সুবিধা ভোগ করতে পারবে। সেবার মান বাড়বে। ট্রেনের সংখ্যা নতুন করে আরও বাড়ায়, তাহলে যাত্রী সংখ্যাও বাড়বে।

স্থানীয় লোকজন বলেন, ঢাকা-চ্রগ্রাম-লাকসাম রেলপথ এখন ডাবল লাইন হবে, এতে আমরা অনেক খুশি। প্রধানমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। আগে আসা যাওয়া করতে অনেক কষ্ট হয়েছে, এখন ট্রেন ভ্রমনে আর কষ্ট হবে না। কলেজ ছাত্রী তাহমিনা আক্তার জুই বলেন, ট্রেন যোগে নিয়মিত কলেজে যাওয়া আসা করতে হয়। প্রায় সময় ট্রেন ক্রসিংয়ে বসে যায়। এতে করে তাদের সময়মতো কলেজে যাওয়া হয় না। ডাবল লাইন চালু হলে এ সমস্যা আর হবে না। এ রেলপথ উদ্ধোধনের খবরে খুবই খুশি বলে জানায়। ট্রেন চালক আজিজুল ইসলাম বলেন, ডাবল লাইন চালু হলে সময় অনেক বেঁচে যাবে। ক্রসিংএর জন্য বসে থাকতে হবে না। আগে সিঙ্গেল লাইনে ট্রেন সঠিক সময়ে চালানো অসুবিধা হতো। ডাবল লাইন হওয়াতে ট্রেন একদিকে আসবে আরেক দিকে যাবে। সেবার মানও বাড়বে। দুর্ঘটনারও শঙ্কা থাকবে না। আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সুপার মো: নুরুন্নবী বলেন, আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেলপথ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে এ পথের উদ্ধোধন করা হবে। ডাবল লাইন হওয়াতে ট্রেন একদিকে আসবে আরেক দিকে যাবে। সেবার মানও বাড়বে। ফলে কোনো ধরনের দুর্ঘটনারও শঙ্কা থাকবে না।

আরও পড়ুনঃ  ‘দেশের সব উপজেলায় হবে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন’

আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেলপথ নির্মাণ কাজ প্রকল্প পরিচালক মো: সুভক্ত গীন বলেন, আখাউড়া-লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন কাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। কাজ শেষ হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রেলপথ আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্ধোধন করবেন। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্মন্ন করা হয়েছে। এ পথ ডবল লাইন করার ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে অন্ত:ত পৌনে ১ ঘন্টা সময় সাশ্রয় হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন