ফরিদপুরের কুমার নদের হারানো ঐতিহ্য ফেরাতে ও কুমার নদের দূষণ-দখল বন্ধে নৌ র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৬ জুলাই) বিকাল ৫ টার দিকে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট পৌর প্রতিমা বিসর্জন ঘাটে এ নৌ র্যালীর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল আহসান তালুকদার।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসন এ নৌ র্যালীর আয়োজন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ইংল্যান্ড টেমস নদীর তীরে অবস্থিত। এ টেমস নদী একসময় বিভিন্ন বর্জ্যে দূষিত হয়ে পড়ে। পরে সে দেশের সরকার উদ্যোগ নিয়ে নদীটিকে দূষণমুক্ত করে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে। আমরাও কুমার নদকে সংস্কার ও দূষণমুক্ত করে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেখানে রাজহাঁস ছেড়ে দিয়ে আরও দৃষ্টিনন্দন করতে চাই। কাউকে এ নদকে দূষণ করতে দিবোনা, একটা চিপসের প্যাকেটও ফেলতে দিবোনা।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াসিন কবীরের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান, হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুবুল আলম, জেলা আ’লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে অধ্যক্ষ প্রফেসর অসীম কুমার সাহা, সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কাজী গোলাম মোস্তফা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লাসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ, এনজিও, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এ নৌ র্যালীতে দুটি ট্রলারসহ ১৪টি নৌকা অংশগ্রহণ করে বলে জানান ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালী।
তিনি বলেন, ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট পৌর প্রতিমা বিসর্জন ঘাট থেকে এ নৌ র্যালীর যাত্রা শুরু হয়। পরে তা দেড় কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে শহরের চরকমলাপুর মাদ্রাসা ঘাটে গিয়ে তা শেষ হয়।
এ নৌ র্যালীতে ভাটিয়ালি গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমি সহ সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
এসময় নৌকার সামনে নদী দূষণ রোধে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্লাকার্ড শোভা পায়। সেখানে লেখা থাকে- “কুমার নদ মায়ের মতন, তাহারে করিলে যতন, মিলিবে অমূল্য রতন”, “কুমার মোদের অলঙ্কার, তারে রাখি পরিষ্কার”, “কুমার নদ বাঁচান”, “প্লাস্টিক বর্জ্য নদীতে ফেলবেন না”, “নদী দূষণ প্রতিহত করুন”, “নদী দূষণকারী পরিবেশের শত্রু” সহ নানা শ্লোগান।
এর আগে ১৭ জুন কুমার নদের ওই দেড় কিলোমিটার অংশে কচুরিপানা অপসারণ করা হয়। পরে গত ২২ জুন কুমার নদ দূষণ রোধে সচেতনতামূলক র্যালীর আয়োজন করা হয় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে।