শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরিষা ক্ষেতে পর্যটন

সরিষা ক্ষেতে পর্যটন
  • ঘাটাইলে বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি

নীল আকাশের নিচে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুল। সকালের সূর্যের কিরণ প্রতিফলিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই সরিষা ফুলের সমারোহে হেসে ওঠে চারদিক। বলছি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পৌর এলাকার ফতের পাড়া নামক এলাকার কথা। টোক নদীর পাড় ঘেসেই ৬-৭ একর জমিতে চাষ করা হয়েছে সরিষা। আর এই সরিষা খেতে,মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ মাছিরা। পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদে সরিষা ফুলগুলো বাতাসে দোল খেতে থাকে। ফুলগুলোর তাদের কলি ভেদ করে সুভাস ছড়িয়ে দিচ্ছে চারদিকে। এ যেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলা ভূমি।

সরেজমিন সরিষা জমিতে গিয়ে দেখা যায়, ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সরিষা মাঠ জুড়ে ভিড় করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ, শিশুসহ বিনোদন প্রেমিরা। সরিষা মাঠ ঘুরে ঘুরে দেখছেন। কেউবা আবার মোবাইলফোনে সেলফি তুলছেন। পাশেই রয়েছে পৌরসভার ফতেরপাড়া ও শহর সংযোগ টুক নদীর উপরে একটি ব্রিজ, বিকেল শুরু হতে না হতেই শীতের কাপড় গায়ে জড়িয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে এই ব্রিজের উপরেও ভিড় জমান প্রকৃতি প্রেমী দর্শনার্থীরা।

একাধিক কৃষকের সঙ্গে বলে জানা যায়, এক সময় জেলায় ব্যাপক পরিমাণে সরিষার আবাদ হতো। সয়াবিনের ওপর নির্ভরতা বাড়ায় বর্তমানে অনেকটাই কমে গেছে সরিষার আবাদ। তবুও ধান চাষের পাশাপাশি ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সরিষার চাষ হয়ে থাকে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর ৩৪৬৬ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  বাউফলে ৭৩ টি পূজা মন্ডপে চলছে রং তুলির শেষ কাজ

ঘাটাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, কৃষকদেরকে আমরা সব ধরনের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষক তুলা মিয়া বলেন, সরিষা চাষ করতে প্রতি বিঘা জমিতে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। লাভ হবে প্রতি বিঘাতে ৫ হাজার টাকা। সরিষা চাষে যে সার আমরা ব্যবহার করি, পরবর্তীকালে ইরি ধান রোপনের সময় সার বেশি দেওয়া লাগে না। এতে আমাদের খরচ কিছুটা কমে যায়। এবার মেঘ-বৃষ্টি না হলে আমরা লাভবান হবো।

কৃষক আনসার আলী বলেন, সরিষা গাছে ফুল আসা শুরু হয়েছে মাত্র, কার্তিক মাসে বীজ বনেছি , পৌষ -মাঘ মাসের দিকে আমরা সরিষা তুলব ,আশাবাদী সরিষা চাষে এ বছর অধিক লাভ পাবো। কিন্তু পোকার আক্রমণ হলে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারি।

ঘাটাইল উত্তরপাড়ার কৃষক রেজা বলেন, এক সময় সরিষা আবাদ ঘাটাইলের ঐতিহ্য ছিল। সয়াবিনের ওপর নির্ভর হওয়ার কারণে সরিষার আবাদ এখন অনেকটা বিলুপ্তির পথে। আমরা তেল জাতীয় ফসল আমদানি করার জন্য সরিষা চাষকে গুরুত্ব দিচ্ছি। দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলি করারও চেষ্টা করছি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন