শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ.লীগ-জাপার পালে হাওয়া

আ.লীগ-জাপার পালে হাওয়া

বগুড়া-৪ আসনে বিএনপির এমপি মোশারফের পদত্যাগ

বগুড়া-৪ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন পদত্যাগের পরপরই শূন্য এ আসনে উপ-নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে। ফের রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়েছেন আ.লীগ, জাতীয় পার্টি ও জাসদ নেতাসহ সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিএনপির এমপি মোশারফ হোসেন গত রবিবার জাতীয় সংসদে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। গেজেট হলেই শূন্য আসনে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। তিনি বলেন, এটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। নির্বাচন করতেই হবে। গেজেট হলে তাদের কাজ শুরু হবে। কারণ আসন শূন্য রাখার কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলা নিয়ে গঠিত বগুড়া-৪ আসনের অনেক নেতা জাতীয় সংসদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা দীর্ঘদিন সাংগঠনিক কার্যক্রমে না থাকলেও ভোটের সময় এলেই মনোনয়নের জন্য মাঠে আসেন। অন্তবর্তী সময়ের জন্য সংসদে গিয়ে ভবিষ্যৎ পরিস্কার করার চিন্তা করছেন নেতারা। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আটজন। তবে জাতীয় পার্টি ২০২১ সালে এ আসনে একজনকে আগাম মনোনয়ন দিয়ে রেখেছে। তিনি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা জাপার যুগ্ম-আহবায়ক মো. ফারুক আহমেদ।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, বগুড়া জেলা জাসদের সভাপতি, ১৪ দলের নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য একেএম রেজাউল করিম তানসেন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ আহসানুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদুল করিম কল্লোল, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা, কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র হেলাল উদ্দিন কবিরাজ, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী, কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন কবিরাজ।

আরও পড়ুনঃ  মাস্কের দাম নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে- বগুড়ার আলোচিত ও সমালোচিত অভিনেতা আশরাফু আলম সাঈদ ওরফে হিরো আলম, নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াত নেতা কাহালু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সতন্ত্র সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা তায়েব আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইদ্রিস আলী, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের কাজী এমএ কাশেম, বিএনএফের জীবন রহমান।

সূত্রমতে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নে মোশারফ হোসেন বগুড়া-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘ একবছর নানা নাটকীয়তার পর ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল শপথগ্রহণ করেন। গত ১০ ডিসেম্বর শনিবার ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ থেকে বিএনপি দলীয় এ সংসদ সদস্য দলীয় সিদ্ধান্তে সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এরপর গত রবিবার জাতীয় সংসদে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে কাঙ্খিত কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিএনপির দলীয় এমপির মাধ্যমে কিছু রুটিন উন্নয়ন কাজ হয়েছে। তবে, সংসদ সদস্য থেকে তার পদত্যাগে সেই উন্নয়নও মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটাররা।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী বলেন, এমপি থেকে পদত্যাগ করা মোশারফ হোসেন কখনো রাজনীতি করেননি। তিনি রাজনীতিতে পরগাছা হিসেবে পরিচিত। জনগণ ও নির্বাচনী এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। এমপি থেকে পদত্যাগ করে মোশারফ হোসেন জনগনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলাম। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও দলের সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। অনেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। আমি শহীদ পরিবারের সন্তান। আওয়ামী লীগ বিরোধীদল থাকাকালে বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতন ও মামলার শিকার হয়েছি। ত্যাগ বিবেচনা করলে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী।

আরও পড়ুনঃ  থেমে থেম আরও ৩ দিন বৃষ্টি থাকতে পারে 

নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দূর্গে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম শক্তিশালী করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গ্রামে-মহল্যায় জনগণের কাছে তুলে ধরেছি। জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচিত করে বিজয় অর্জন করেছি। দক্ষতা বিবেচনা করলে দলীয় মনোনয়ন তিনিই পাবেন বলে আশাবাদী।

বগুড়া জেলা জাসদের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য একেএম রেজাউল করিম তানসেন বলেন, আমি এমপি থাকাকালে নির্বাচনী এলাকায় রাস্তা-ঘাটসহ দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। ১৪ দলের বিবেচনায় নৌকার মনোনয়ন তিনিই পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুক আহমেদ বলেন, পার্টি ২০২১ সালে এ আসনে আমাকে আগাম মনোনয়ন দিয়ে রেখেছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন