শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চেয়ারম্যান ফারুকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ 

চেয়ারম্যান ফারুকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ 

নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হিমায়েত হুসাইন ফারুকের বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়নের ৮জন সদস্য বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করেছেন। নড়াইল স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ফকরুল হাসানের নিকট রবিবার দুপুরে অভিযোগপত্রটি জমা দিয়েছেন। অভিযোগপত্রের অনুলিপি সদর উপজেলার কয়েকটি দপ্তরেও  দেয়া হয়েছে।

নড়াইল জেলা প্রশাসক বরাবরে ‘নড়াইল সদর থানার ১২নং বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রসঙ্গে’ বিষয়ে লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়নের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত এলজিএসসপি, এডিবি, টিআর, কাবিটা, টিসিবি,  ভিজিডি, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব প্রকল্প নিজের ইচ্ছামতো ও পছন্দের লোক দিয়ে বাস্তবায়ন করছেন। পরিষদের ৮ জন্য সদস্যকে ডাকা হয় না। মাসিক মিটিং বা রেজুলেশনও করা হয় না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসব সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করা হয়। এছাড়া পরিষদের হোল্ডিং ট্যাক্স এবং ট্রেড লাইসেন্সের টাকা আদায় করে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। গত এক বছর যাবৎ তিনি নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন।

বিছালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আলী ইমাম সরদার অভিযোগ করে বলেন, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে হামলার শিকারসহ বিভিন্নভাবে অপমান-অপদস্থ হতে হয়। চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী গত ৮ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে রুখালী গ্রামের মনোর খাল এলাকার আলমের চায়ের দোকানে আমাদের কয়েকজন মেম্বরের ওপর হামলা চালিয়ে আমাদের এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে। এতে আহত হয়ে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছি এবং ঘটনা উল্লেখ করে নড়াইল সদর থানায় ৮জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছি। আবারও আমাদের ওপর হামলা হতে পারে এমন আশংকা করছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

আরও পড়ুনঃ  কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

অভিযোগের বিষয়ে বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. হিমায়েত হুসাইন ফারুক বলেছেন, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সব ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হচ্ছে। কতিপয় ইউপি সদস্য সব কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে, আমি রাজি হই নাই। এ জন্য তারা আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন। আর মেম্বররা আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয়ার কেউ নন। ইউনিয়নের জনসাধারন যদি আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয় তাহলে পদত্যাগ করবো।

ইউপি সদস্যদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, মেম্বরদের ওপর হামলার বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। হামলার সঙ্গে আমি বা আমার লোকজনের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বরত উপ-পরিচালক ফকরুল হাসান উপস্থিত মিডিয়া কর্মীকে বলেছেন, ‘বিছালী ইউনিয়নের ৮জন সদস্য অফিসে উপস্থিত হয়ে একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বিছালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য পান্না বিশ্বাস, ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য খন্দকার মঈন উদ্দিন,  ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য গাজী হাফিজুর রহমান, ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আলী ইমাম সরদার, ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সাধন কুমার বিশ্বাস এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য হোসনে আরা বেগম ও রাজিয়া বেগম।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন