শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নান্দনিক হস্তশিল্পে জীবিকা

নান্দনিক হস্তশিল্পে জীবিকা

বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি করে জীবনযাপন করছেন শ্রী সঙ্গীত কুমার দেব (৩৫) নামে এক যুবক। বাঁশের তৈরি পণ্য কাঁধে ও হাতে করে ঘুরে বেড়ান এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট, পাড়া-মহল্লা ও হাটবাজারে। দিন শেষে সঙ্গীতের রাত কাটে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারে। তার ঝুলিতে রয়েছে বিভিন্ন আকার ও সাইজের নানান রংয়ের কুলা, ফলের ডালা, ঢোলা, খালই, ঝুড়ি, দোলনা, চালনসহ হস্তশিল্প সামগ্রী। ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের নান্দনিক এসব বাঁশ পণ্য নজর কাড়ছে শিশুসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের। ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে বাঁশের তৈরি পণ্য। সঙ্গীত কুমার দেবের বাড়ি রাজবাড়ির গোয়ালন্দ। সে ওই এলাকার শ্রী সৃষ্টি কুমার দেবের পুত্র। পরিবারে সদস্যদের হাতে তৈরিকৃত এসব পণ্য বিক্রি করে মাসে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে তার।

জানা যায়, ৫ ভাই বোনের মধ্যে সঙ্গীত দেব বড়। পৈত্রিক ভিটাবাড়ি না থাকায় পিতা মাতাসহ পরিবার পরিজন নিয়ে গোয়ালন্দের ভাড়া বাসায় থাকতে হয় তার। পরিবারটি হস্তশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। একমাত্র আয়ের উৎস এটি। অভাব অনাটনের মধ্যে পরিবারের অর্থ যোগান দিতে দিয়ে লেখা পড়ার করার সৌভাগ্য হয়নি সঙ্গীতের। জীবন সংগ্রামে সঙ্গীত বাঁশের এসব পণ্য বিক্রি করতে ছুঁটে চলছেন বিরতিহীন ভাবে। এরই ধারাবাহিকতায় কখনও মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর, লৌহজং, সিরাজদিখানসহ ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ এলাকায় এসব পণ্য নিয়ে ঘুরে বেড়ান। এ অঞ্চলে অনুষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মেলা-উৎসবে কুটির শিল্পের বাঁশের নানা পণ্য সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেন। শরনার্থীদের কাছে তুলে ধরছেন হাতের শৈল্পিক নির্দশন।  

আরও পড়ুনঃ  সিলেটে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

এক সাক্ষাৎকালে সঙ্গীত কুমার দেব আনন্দবাজারকে বলেন, নিজস্ব হস্তশিল্পের বাঁশের পণ্য বিক্রি করতে বিক্রমপুরে এসেছেন। বিকিকিনি শেষে আপাদত অস্থায়ীভাবে থাকছেন শ্রীনগর বাজার এলাকায়। মাঝে মধ্যে পার্শ¦বর্তী সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলা বাজার ও ঢাকার দোহারের বিভিন্ন হাটবাজারেও অবস্থান করেন তিনি। ঘুরে ফিরে দৈনিক ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। পরিবারের সদস্যরা সবাই বাড়া বাড়িতে হস্তশিল্পের কাজ করেন। ভাড়া এসব পণ্য পাইকারির পাশাপাশি খুচরাভাবে বিক্রি করছেন। তবে শিশুদের খেলনা হিসেবে বাঁশের পণ্য এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে। সাংসারিক কাজে ব্যবহারযোগ্য বাঁশের অসংখ্য পণ্য সামগ্রীও তৈরি করছেন। তবে, প্লাস্টিকের দাপটে পরিবেশ বান্ধব বাঁশের এ হস্তশিল্পটি হারাতে বসেছে। তার পূর্ব পূরুষরাও এ পেশায় ছিলেন। তাই ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পটি ধরে রাখার চেষ্টা করছেন বলেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন