শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধান বেচে ঠকছেন চাষিরা

ধান বেচে ঠকছেন চাষিরা

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে কৃষকের নিকট থেকে অন্যান্য উপজেলার ধানের মূল্যের চেয়ে কম দামে ক্রয় করা হয়। অত্র জেলার অন্যান্য উপজেলার ধানের বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে ঝিনাইগাতি সদর বাজারে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান ব্যবসায়িরা ধান ক্রয় করে থাকে।

ঝিনাইগাতি বাজারটি সপ্তাহে ২ দিন রোববার ও বুধবার সকল ধরনের কৃষি পণ্যসহ ধান বিক্রয়ের বড় বাজার হিসাবে বেচাকেনা হয়। ঐতিহ্যবাহি ঝিনাইগাতি সদর বাজারটি ধান বিক্রয়ের জন্য বিবেচিত হয়।

উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক তাদের ধান বিক্রি করতে উক্ত বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। আর কৃষকের উৎপাদিত ফসল ধান বিক্রি করতে এসে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একদিকে প্রতিমণ ধানের মূল্য ৫০ থেকে ১০০ টাকা কম দামে বিক্রি করতে হয়। আবার প্রতিমণ ধান ওজনে ২/৩ কেজি বেশি দিতে হয়। এতে দরিদ্র ও প্রন্তিক চষিরা নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছে। পাশাপাশি যেহেতু এক মণ ধান ৪০ কেজিতে হয়। সেই হিসেবে প্রতি মণ ধান ৪০ কেজি করে নেওয়ার কথা থাকলেও ক্রেতারা কৃষকের কাছ থেকে প্রতি মণ ধান ৪২ কেজি থেকে ৪৩ কেজি করে মণ হিসেবে ক্রয় করেছেন। এতে দরিদ্র কৃষকরা দুই থেকে তিন কেজি ধানের মূল্য কম পা”েছ। এ ব্যাপারে কৃষকরা প্রতিবাদ করলে তাদের কাছ থেকে ধান ক্রেতারা ক্রয় করেন না। এতে গ্রাম থেকে কৃষকেরা ধান বিক্রি করার উদ্দেশ্যে ভেন, অটো, ট্রলি, রিকশা সহ বিভিন্ন যানবাহনে প্রতিমন ধান পরিবহন খরচ ২০/২৫ টাকা দিয়ে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসে। ক্রেতাদের স্বর্ত সাপেক্ষে ধান না দিলে ক্রেতারা ধান নিতে রাজি হয় না। প্রতিমণ ধানে ৬০ থেকে ৭০ টাকা লুকসানেই ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ ধান বিক্রি না করলে কৃষকের অর্থনৈতিক সংকট মিটাতে পারছে না আবার ধান বাড়িতে ফেরত নিতে হলে পরিবহন খরচ ৩ গুণ বেড়ে যাবে। নানা সমস্যার সম্মূখিন হয়ে কৃষকেরা ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও ক্রেতাদের ইচ্ছে মাফিক প্রতি মণ ধান ৪২/৪৩ কেজিতে ১ মণ হিসেবে এবং কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অনিয়ম চলে আসছে। কৃষকদের প্রতিবাদে কোনো লাভ হচ্ছে না। ঝিনাইগাতী বাজারের বর্তমান ইজারাদার ও বণিক সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান খানকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তিনি আশ্বাস দিলেন বিষয়টি দেখবেন। তবে, দীর্ঘদিন হলো এখন পর্যন্ত এর কোন সুষ্ঠু সমাধান হয়নি। তাই অত্র অঞ্চলের দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের দাবি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এমন প্রত্যাশা অত্র এলাকার কৃষকদের। প্রকাশ থাকে যে একদিকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কম দামে ধান ক্রয় করছে কৃষকদের নিকট থেকে। অপরদিকে প্রতি মনে ধান থেকে দুই থেকে তিন কেজি ধান বেশি নিচ্ছে। এতে দরিদ্র কৃষকরা উভয় দিকে ঠকানো হচ্ছে। যাতে অত্র অঞ্চলের দরিদ্র কৃষকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। এবং কি প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পায়।

Print Friendly, PDF & Email
আরও পড়ুনঃ  দেবোত্তর-একদন্ত সড়কের বেহাল দশা

সংবাদটি শেয়ার করুন