শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সার সংকটে ডিলারদের কারসাজি

সার সংকটে ডিলারদের কারসাজি

নওগাঁর সাপাহারে নির্ধারিত অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে সার। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি নির্দেশনাকে তোয়াক্কা না করে বিএডিসি-বিসিআইসির ডিলাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছেন।  এনিয়ে উপজেলার খুদারামবাটি মহিলিপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে সোবহান আলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি তিনি নওগাঁ জেলা প্রশাসক, জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করেছেন।

সোবহান আলী বলেন, সুফলা ট্রেডার্সের মালিক শ্রী মৃনাল সাহা কাছ থেকে চলতি বছর ধান চাষের জন্য প্রতি বস্তা ডিএপি ৯৫০ টাকায় কিনেছি। এছাড়া এক বস্তা এমওপি এবং এক বস্তা ইউরিয়া সার কিনেছি ১৩০০ টাকায়। সারক্রয়ের রশিদ চাইলেও দেয়া হয়নি। আবার রশিদ দিলেও নির্ধারিত মূল্য উল্লেখ থাকে, অতিরিক্ত টাকা লেখা হয় না।’ সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৮০০ টাকা মূল্যের ডাই অ্যামোনিয়া ফসফেট (ডিএপি) ৯৫০-১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭৫০ টাকার এমওপি বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকায়। ১১০০ টাকার ইউরিয়া বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকায়। এতে কৃষককে বস্তা প্রতি অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে ১০০-৭৫০ টাকা।

সাপাহারের একাধিক কৃষক জানান, বিএডিসি ও বিসিআইসির অনুমোদিত উপজেলার প্রতিটি সার দোকানে মূল্য তালিকা থাকার পরও নির্ধারিত দামে মিলছে না সার। আবার অতিরিক্তি দামে সার ক্রয়ের পর রশিদ চাইলেও দেয়া হয় না। রশিদ চাইলে সার দিতে অপারগতা জানান ডিলাররা। তাদের দাবি, সরকার সারের দাম কমালেও কৃষকের উপকার হচ্ছে না। কেনার সময় ডিলাররা দাম অনেক বেশি নিচ্ছে। বস্তা প্রতি অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে ১০০ থেকে ৭৫০ টাকা। তারা আরও বলেন, সাপাহারের সাগর ট্রেডার্স, খেয়া ট্রেডাস ও গোলাম রাব্বানী ট্রেডার্স থেকে ২১ বস্তা ইউরিয়া, ১০ বস্তা ডিএপি ও ২৮ বস্তা এমওপিসহ মোট  ৫৯ বস্তা রাসায়নিক সার সাপাহার থেকে পার্শ্ববর্তী পত্নীতলা উপজেলায় নিয়ে যাওয়ার সময় কিছু দিন আগে স্থানীয়রা আটক করে উপজেলা পরিষদ হলরুমে জমা দেয়। কেনো অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের বিষয়ে সুফলা ট্রেডার্সের মালিক শ্রী মৃনাল সাহা কোনো উত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, দোকানে বাবুল হোসেন নামে একজন ম্যানেজার থাকে তার কাছ থেকে শুনে আপনাকে জানাতে পারবো। আপনাদের সার লাগলে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এনে সার নিয়ে যায়েন।

আরও পড়ুনঃ  ঝিনাইদহের আম যাচ্ছে ইংল্যান্ডে

সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাপলা খাতুন বলেন, দাম বেশি নেয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলেও কোনো প্রমান পাওয়া যাচ্ছেনা। প্রমাণ পেলে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুন বলছেন, অতিরিক্তি দামে সার বিক্রির বিষয়টি তদন্ত চলমান রয়েছে প্রমান পেলে ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন