মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৯৭ কোটি টাকা আয়-সম্পদ প্রদর্শন

তিতাস নিয়ে শঙ্কা

তিতাস নিয়ে শঙ্কা

গ্রাহকদের কাছে বিভিন্ন বিল প্রদানের শাস্তিস্বরূপ সুদ হিসাবে ২৯৭ কোটি টাকা আয় ও সম্পদ দেখিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। ওই পরিমাণে অর্থ প্রদানে গ্রাহকদের অনীহার কারণে আদায় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে কোম্পানিটির নিরীক্ষক।

সম্প্রতি তিতাস গ্যাসের ২০২১-২২ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষক এ তথ্য জানান। নিরীক্ষক জানায়, দেরিতে বিল প্রদানের কারনে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের উপরে শাস্তি হিসেবে ৮০ কোটি ৯৮ লাখ টাকার সুদ গণনা করেছে। এছাড়া মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জ হিসেবে পিডিবির কাছে ১৬৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা ও ইজিসিবির কাছে ১৪ কোটি ৯ লাখ টাকা আর্থিক হিসাবে পাওনা দেখিয়েছে। এছাড়া প্রাইভেট পাওয়ার গ্রাহকের কাছে হায়ার হিটিং ভ্যালু (এইচএইচভি) হিসাবে ৩৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আয় দেখিয়েছে। কোম্পানিটি ২০০২ সাল থেকে এই আয় ও গ্রাহকের কাছে টাকা পাওনা হিসেবে আর্থিক হিসাবে দেখিয়ে আসছে। ওই ২৯৭ কোটি ৭ লাখ টাকার মধ্যে থেকে কোন অর্থ আদায় হয়নি।

এছাড়া নিরীক্ষককে ওইসব গ্রাহকরা শাস্তির সুদ, মিটার ভাড়া, ডিমান্ড চার্জ ও এইচএইচভির টাকা প্রদানে অনাগ্রহের কথা জানায়। যা আদায় নিয়ে নিরীক্ষক সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ওই পাওনা পুরো অর্থের উপর সঞ্চিতি গঠনের কথা বলেছে।

আরও জানায়, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ পদ্মা ব্যাংকে (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) ৫৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা এফডিআর করেছে। কিন্তু ব্যাংক দুটির দূর্বল অবস্থার কারনে ওই টাকা আদায় নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যাতে করে সঞ্চিতি গঠন করা উচিত। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তা করেনি। এতে করে মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখানো হচ্ছে। তিতাস কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ২০৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার মজুদ পণ্য (ইনভেন্টরি) দেখিয়েছে। কিন্তু স্বশরীরে যাচাইয়ে এরমধ্যে অনেক নিস্ক্রিয় ও অকেজো আইটেম পেয়েছে নিরীক্ষক। যার মূল্য কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নির্ধারন করেনি। এর মাধ্যমে তারা মজুদ পণ্যের পরিমাণ বেশি দেখিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  সুবিধাবঞ্চিত ডেফলাই বেদে পল্লী

এদিকে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) ২০২০ সালের ২ মার্চের এক নির্দেশনায় শেয়ার মানি ডিপোজিটকে অফেরতযোগ্য ও ৬ মাসের মধ্যে শেয়ার ক্যাপিটালে রুপান্তর করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া শেয়ার মানি ডিপোজিটকে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) গণনায় বিবেচনায় নিতে বলা হয়। তবে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এফআরসির এই নির্দেশ মানছে না। তিতাস গ্যাস সরকারের কাছ থেকে ৫২ কোটি ১৮ লাখ টাকার ইক্যুইটি সংগ্রহ করেছে। যা শেয়ার মানি ডিপোজিট হিসাবে দেখানো হয়েছে। এই কোম্পানিটির চলতি বছরের ৩০ জুন শেয়ার মানি ডিপোজিটের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকায়। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এই শেয়ার মানি ডিপোজিটকে শেয়ার ক্যাপিটালে রূপান্তর করেনি।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন