রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুরুর আগেই গণসমাবেশ

শুরুর আগেই গণসমাবেশ

মানুষ আ.লীগের বিদায় দেখতে চায়: মির্জা ফখরুল

কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হয় গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে। কুমিল্লা টাউন হল মাঠে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদের সভাপতিত্বে ওই সভা শুরু হয়। গণসমাবেশের শুরুতে কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়।

এরপর মোনাজাত হয়। মোনাজাতে বিএনপির নিপীড়িত নেতা-কর্মী, গুম ও হত্যার শিকার নেতা-কর্মীদের জন্য দোয়া করা হয়। পরে ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ গানটি পরিবেশন করা হয়। এরপর তিন জেলা বিএনপির ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

দুপুর একটার পর মঞ্চে আসেন কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান উপদেষ্টা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের বিদায় দেখতে চায়। সময় থাকতে মানে মানে কেটে পড়ুন। তা না হলে এদেশের মানুষ আপনাদের বিদায় করবে। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, যারা তাকে বলে প্রধানমন্ত্রী। আমরা বলি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী। জোর করে দুইবার নির্বাচন করেছে। ২০১৪ আর ২০১৮। ২০১৪ তে কেউ ভোট দিতে যায়নি। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেছে। আর ২০১৮ তে আগের রাতেই নাকি ভোট শেষ।

আরও পড়ুনঃ  স্বামীর নমুনা সংগ্রহ করায় সন্তান নিয়ে পালিয়েছে স্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, উনি নাকি আবার নির্বাচন করবেন। গত পরশু যাশোরে সভা করেছেন। সভায় তিনি ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ এলে নাকি জনগণ শান্তি পায়। আর বলেছেন- আবার নৌকায় ভোট দেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আব্বাস উদ্দিনের একটা গান আছে- ‘আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না।’ দেশের সব মানুষ এখন এই গান গাইতে শুরু করেছে। ভুলে যান, ওই নৌকার কথা ভুলে যান। এখন বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের বিদায় দেখতে চায়। মানে মানে কেটে পড়ুন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৫ বছরে এই আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের যত অর্জন ছিল, যত স্বপ্ন ছিল সমস্ত কিছুকে ধ্বংস করে দিয়েছে, নষ্ট করে দিয়েছে। যেদিকে তাকাবেন খালি চুরি চুরি আর চুরি।

গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে টাউন হল মাঠ ছাপিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নগরের জিলা স্কুল সড়ক, ভিক্টোরিয়া কলেজ সড়ক, নজরুল অ্যাভিনিউ, পুলিশ লাইনস সড়কে অবস্থান নেন। কুমিল্লা টাউন হল মাঠের সামনের সড়কে, পূবালী চত্বর ঘিরে অবস্থান নেন হাজার হাজার নেতা-কর্মী। তাঁদের হাতে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড। তবে সমাবেশ শুরুর আগের রাত থেকেই সমাবেশে আসতে থাকেন নেতাকর্মীরা। কুমিল্লা টাউন হল মাঠের সমাবেশস্থলে তারা নেচে-গেয়ে-মিছিল করে রাত কাটান।

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলের পাঁচ নেতাকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে এ গণসমাবেশ করছে। এর আগে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে প্রথম গণসমাবেশ হয়। পরে ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর ও সিলেটে সমাবেশ হয়। আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী ও ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন