শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিভাগীয় কমিশনারদের বৈঠক

প্রবাসীদের আয়ে প্রণোদনা বৃদ্ধির প্রস্তাব

প্রবাসীদের আয়ে প্রণোদনা বৃদ্ধির প্রস্তাব

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দু’ভাবে প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রবাসীদের টাকার ওপর বিদ্যমান সুবিধার সঙ্গে আরও প্রণোদনা যোগ করলে তাঁরা বিদেশ থেকে বৈধ উপায়ে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হবেন এমন প্রত্যাশা রেখে চলমান ডলার সংকট সামাল দেওয়া সম্ভব হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে রোববার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে বিভাগীয় কমিশনারদের বৈঠক হয়। এতে এই প্রস্তাব উপস্থাপন করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনীরুছ সালেহীন। বৈঠকে বিভাগীয় কমিশনার ছাড়াও কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রবাসীকল্যাণ সচিব সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি ভেবে দেখার প্রস্তাব দিয়েছেন।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বৈঠকে ডলার সংকট ও খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বসহকারে আলোচনা করেন। ডলার সংকট কাটাতে বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয় দেশে আনার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।

আলোচিত প্রস্তাবে রেমিট্যান্সের ওপর দু’ভাবে বেশি হারে প্রণোদনা দেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি। এর মধ্যে নিয়মিত যে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে তা আরও বাড়ানোর কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেক প্রবাসীকে দেশে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে উৎসাহিত করতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব দেন সচিব। প্রবাসীদের আয়ের টাকা দেশে পাঠালে পরিবারের লোকজন অনেক সময় অপব্যবহার করেন উল্লেখ করে বলেন এতে অনেক প্রবাসী ব্যক্তি দেশে ফিরে হতাশ হয়ে পড়েন। এই সমস্যা সমাধানে প্রবাসীদের নিয়মিত টাকা পাঠানোর পাশাপাশি একটি সঞ্চয়ী ব্যাংকে হিসাব খুলতে উৎসাহিত করা যায়।

আরও পড়ুনঃ  সাত মাসে রেমিট্যান্স এলো ৬৩৪ কোটি ডলার

এমন হিসেব যে হিসাবের টাকা প্রবাসী ব্যক্তি দেশে এলে নিজেই তুলবেন। এই হিসাবে রেমিট্যান্সে নিয়মিতভাবে যে প্রণোদনা দেওয়া হয় সেটাও পাবেন। একই সঙ্গে আরও বিশেষ একটি প্রণোদনা যোগ করলে প্রবাসীরা দেশে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন। যা প্রবাসীদের বৈধ উপায়ে দেশে রেমিট্যান্স পাওয়ার জন্য সহায়ক হবে।

বক্তারা বলেন, প্রবাসীরা হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠান দুই কারণে। প্রথমত, দ্রুত টাকা তাঁদের পরিবারের কাছে পৌঁছে যায়; দ্বিতীয়ত, বৈধ চ্যানেলের চেয়ে বেশি টাকা প্রণোদনা পান। এই ক্ষেত্রে শুধু প্রণোদনা বাড়ালেই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি আসবে কিনা- এ বিষয়ে বৈঠকে দু-একজন দ্বিমত পোষণও করেছেন। তবে দুই ক্ষেত্রেই যদি পদক্ষেপ নেওয়া যায় তাহলে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়বে বলে আশা করা যায়।

প্রবাসীরা পাঠানো রেমিট্যান্সে বর্তমানে বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী শতকরা আড়াই টাকা পান। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা বৈধ চ্যানেলে পাঠালে দেশে সেটা ১০২ টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছেন। সংশ্নিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের অর্ধেকই হুন্ডির মাধ্যমে আসে। হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে প্রবাসীরা ১০০ টাকায় ১০৫ টাকার বেশি পান। তাই তাঁরা ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা না পাঠিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠান।

উক্ত বৈঠকে বিভাগীয় কমিশনাররা বলেছেন, সম্প্রতি তাঁরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পরিদর্শন বাড়িয়েছেন। কৃষকরা সার, ডিজেলসহ সব প্রয়োজনীয় উপকরণ যাতে ঠিকমতো পান তা নিশ্চিত করতে তদারকি করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে কৃষি খাতের খোঁজখবর নিয়ে সব ধরনের প্রশাসনিক সহযোগিতা দিচ্ছেন। বালু ও জলমহাল ইজারার বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে নির্দেশ দিয়েছেন ভূমি সচিব।

আরও পড়ুনঃ  চুক্তির ৩ বছরেও কার্যক্রম শুরু হয়নি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন