শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাইপলাইনে ডিজেল

পাইপলাইনে ডিজেল
  • দেশে বাড়বে জ্বালানি সরবরাহ
  • ভারতের ডিজেল বাংলাদেশে

দেশে জ্বালানির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিও করা হচ্ছে জ্বালানি। তবে বিপুল পরিমাণ খরচও হচ্ছে। তাই অনেকটা কম দামে সরবরাহ বাড়াতে প্রতিবেশী দেশ থেকে জ্বালানি আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এবারই প্রথম দেশের বাইরে থেকে পাইপ লাইনে ডিজেল আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এজন্য বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।

ইতোমধ্যে উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ডিজেল সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য প্রস্তুতি চলছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পক্ষে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (এমপিএল) ও ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) যৌথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন স্থাপন নামের এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। কর্মকর্তারা বলছেন, পাইপলাইনের ফিনিশিং পর্যায়ের কাজ চলছে। আগামী ডিসেম্বরে কাজ শেষ হবে। জানুয়ারিতে মেকানিক্যাল কমিশন এবং অপারেশনাল কমিশনিং শেষ হলে তা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রথম তিন বছর দুই লাখ টন, পরের তিন বছর তিন লাখ টন, এর পরের চার বছর পাঁচ লাখ টন এবং অবশিষ্ট পাঁচ বছরে ১০ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানি করা যাবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী বছরের মার্চের শুরুতে পাইপলাইনে ভারত থেকে ডিজেল আসবে বাংলাদেশে। পাইপলাইনে আসার কারণে দেশে জ্বালানি সরবরাহ বাড়বে এবং জ্বালানি পরিবহনের খরচ কমে আসবে। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে আসায় ভারতের শিলিগুড়িতে চলছে ডিজেল সরবরাহের প্রস্তুতি।

মূলত, দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই ডিজেল। বছরে ডিজেলের চাহিদা প্রায় ৪৬ লাখ টন। যার ৮০ শতাংশই সরকার সরাসরি আমদানি করে। বিপুল পরিমাণ ডিজেল আমদানিতে নানা প্রতিবন্ধতা দেখা দেয়। ২০১৭ সাল থেকে নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে রেলওয়ের মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রায় ২২শ টন ডিজেল আমদানি করছে বিপিসি। ট্রেনে করে এ তেল পার্বতীপুরের ডিপোতে পৌঁছাতে সময় লাগে এক মাস।

আরও পড়ুনঃ  বিপজ্জনক রাসায়নিক সরাতে আলটিমেটাম

তবে পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ভারত থেকে পার্বতীপুর রেল ডিপোতে ডিজেল আসতে সময় লাগবে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। এতে পরিবহন খরচ অনেকটাই কমে যাবে। ভারত থেকে ডিজেল আমদানির লক্ষ্যে তাই ২০২০ সালে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। ভারতের নুলাইবাড়ি রিফাইনারি লিমিটেড থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর তেল ডিপো পর্যন্ত ১৩১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানোর পরিকল্পনা করা হয়। যার মধ্যে ভারতের অংশে রয়েছে পাঁচ কিলোমিটার আর বাংলাদেশের অংশে ১২৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার।

চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে ১৫ বছর ডিজেল আনতে পারবে বলে জানিয়েছে বিপিসি। বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, জ্বালানি তেল আনার ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেলে (১৫৯ লিটার) গড়ে ১০ ডলার প্রিমিয়াম (জাহাজভাড়াসহ অন্য খরচ) দিতে হয় বিপিসিকে। ভারত থেকে আনার ক্ষেত্রে এটি আট ডলার হতে পারে। প্রতি ব্যারেলে দুই ডলার কমলে প্রতি এক লাখ টনে প্রায় ১৫ লাখ ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব। তাই ভারত থেকে আমদানি হলে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন