শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মন্দার প্রভাব বন্দরে

মন্দার প্রভাব বন্দরে

বিশ্বজুড়ে মহামন্দার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। জাতিসংঘ থেকে বার বার সতর্কবার্তা দেয়া হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী চাপে পড়ছে অর্থনীতি। বাংলাদেশেও ব্যয় সাশ্রয়ে বিলাসী পণ্য আমদানি কমানো হয়েছে। রিজার্ভ বাড়াতে রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তবে মহামন্দার প্রভাবে রপ্তানিও কমে আসছে উল্লেখযোগ্য হারে। যার চিত্র দেখা গেছে দেশের বন্দরগুলোতে।

দেশের অর্থনীতির প্রবেশদ্বারখ্যাত পরিচিত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কমে গেছে আমদানি-রপ্তানি। মূলত, কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ওপর নির্ভর করেই সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানির হিসাব করা হয়। এ হিসাবে গত প্রায় দুই মাসে দেশের প্রধান বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমেছে। আমদানি-রপ্তানি দুটোই হয়ে গেছে নিম্নমুখী। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক মন্দার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, সদ্য বিদায় নেয়া অক্টোবর মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৯৭ হাজার ৫৩৮ টিইইউস। আগের মাসে যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৪৯৩ টিইইউস। তারও আগের মাস আগস্টে ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৯২০ টিইইউস। হিসাবে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের আগস্টের তুলনায় পরের দুই মাসে কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমে গেছে ১৭ হাজার ৩৮২ টিইইউস।

আবার উল্টোদিকে, বিদায়ী অক্টোবরে চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৫৯ হাজার ৩৩১ টিইইউস। তার আগের মাস সেপ্টেম্বরে যা ছিল ৬৩ হাজার ৮০৩ টিইইউস। আর দুমাস আগে আগস্টে ছিল ৭৫ হাজার ৬৯৭ টিইইউস। বলা যায়, চলতি বছরের আগস্টের তুলনায় বিগত দুই মাসে রপ্তানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমে গেছে ১৬ হাজার ৩৬৬ টিইইউস।

আরও পড়ুনঃ  পাইকগাছায় ২শ বানভাসি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সহায়তা প্রদান

অন্যদিকে, বিগত বছরের তথ্য থেকে দেখা যায় ২০২১ সালের অক্টোবরে আমদানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৫৯ টিইইউস। অথচ এক বছর পর একই সময়ে অক্টোবরে তা দাঁড়ায় ৯৭ হাজার ৫৩৮ টিইইউসে। হিসাব মতে, গেল বছরের তুলনায় চলতি বছরে কম আদমানি হয়েছে ২৭ হাজার ১২১ টিইইউস কনটেইনার পণ্য।

একইভাবে গেল বছরের অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছিল ৭০ হাজার ২৭০ টিইইউস কনটেইনার পণ্য। চলতি বছরের একই মাসে যা ছিল ৫৯ হাজার ৩৩১ টিইইউস। হিসাবে দেখা যায়, গেল বছরের তুলনায় এবছরে একই সময়ে ১০ হাজার ৯৩৯ টিইইউস কনটেইনার পণ্য কম রপ্তানি হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বিদায়ী অক্টোবরে আমদানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৯৭ হাজার ৫৩৮ টিইইউস। একই সময়ে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৫৯ হাজার ৩৩১ টিইইউস। আগের মাস সেপ্টেম্বরে আমদানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৪৯৩ টিইইউস এবং রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৬৩ হাজার ৮০৩ টিইইউস।

বলা যায়, গেল এক মাসের ব্যবধানে আমদানি রপ্তানি দুটোই কমেছে। আবার মাস দুয়েক আগে আগস্টে আমদানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৪৯৩ টিইইউস। আর রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৭৫ হাজার ৬৯৭ টিইইউস। অর্থাৎ আগস্টের তুলনায় গেল দুই মাসে রপ্তানি-আমদানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং দুটোই কমেছে যথাক্রমে ১৬ হাজার ৩৬৬ টিইইউস ও ১৭ হাজার ৩৮২ টিইইউস।

চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। আবার বৈশ্বিক মন্দার কারণে কমে গেছে রপ্তানিও। বন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীরা কম পণ্য আনা-নেওয়া করায় পণ্য হ্যান্ডলিংও কমে গেছে। তবে কর্মকর্তারা আশা করছেন, শিগগিরই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা যাবে।

আরও পড়ুনঃ  পহেলা আগস্ট থেকে ইতালি যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক মাস ধরে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় পণ্য আমদানি কমিয়ে দিতে হয়েছে। তাছাড়া বৈশ্বিক মন্দার কারণে বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিও কমিয়েছে। এসব কারণে আমদানি-রপ্তানি দুটোই কমেছে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন