শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শরৎ শুভ্রতা---

প্রকৃতিতে সাজ সাজ রব

প্রকৃতিতে সাজ সাজ রব

শরৎ এর শেষ বিকেল। থেমে থেমে বৃষ্টি। কালো মেঘের আবরণ ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে মিষ্টি রোদ। সাদা মেঘের মিটিমিটি হাসি যেন শুভ্রতা ছড়াচ্ছে চারদিকে। ফুটেছে রঙিন শিউলি। সাদা কাঁশফুল শারদ বন্দনার কলরবে মেতে উঠেছে। শরৎ শোভায় প্রকৃতিতে সাজ সাজ রব। নীল আকাশে চলছে সাদা-কালো মেঘের লুকোচুরি। কখনো কালো মেঘে আবার কখনো সাদা মেঘের আভরণে লুকিয়ে হাসছে সোনালি সূর্য।

দিগন্তময়ী শুভ্রতা লোকালয় ছেড়ে পৌঁছে গেছে প্রকৃতির নগরীখ্যাত জাবি ক্যাম্পাসে। সুইজারল্যান্ড এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল প্রাঙ্গণ এখন সাদা সাদা কাঁশফুলের দখলে। সাদা মেঘের খুনসুটি আর দিগন্তজোড়া কাশফুলের বাতাসে দোল খাওয়ার দৃশ্য যেন মন কাড়ে সবার। প্রতিবছর শরতের এই সময়টাতে ক্যাম্পাস যেন মিলনমেলায় পরিণত হয়।

ঠাণ্ডা শীতল বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা কাশফুল। আর এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রায়ই ভিড় জমাচ্ছেন ক্যাম্পাসের আশেপাশে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা। কেউ বা স্বপরিবারে ঘুরতে এসেছেন আবার কেউ প্রিয়জনের সাথে এসেছেন সোনালী শরতের মিষ্টি গন্ধের স্বাদ নিতে।

ক্যাম্পাসের লেক পাড়ের সুইজারল্যান্ড, সিডনি ফিল্ড, রাঙামাটি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের সামনের প্রাঙ্গণে যেন সাদা কাশফুলের মেলা বসেছে। সাদায় সাদায় মুখরিত। অনেকে মুক্ত মনে সাদা কাশফুলের ঘ্রাণ নিচ্ছেন, সুন্দর সেই অনুভূতিগুলো সেলফিবন্ধ করছেন।

প্রতি বছর শরতের আগমনে শিক্ষার্থীদের কোলাহল বাড়ে। থোকায় থোকায় কাশফুল যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে সবাইকে। কাশফুল তুলতে হিড়িক পড়ে তাদের মধ্যে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, বাংলাদেশে ঝকঝকে নীল আকাশ, ঝলমলে সূর্য, অফুরান প্রাণশক্তি এবং পূঁজোর আমেজ নিয়ে আসে শরৎকাল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাই শরতের পূর্ণ আমেজ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনঃ  স্বাধীনতা যুদ্ধে সর্বপ্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলে ইপিআর

লেক ভর্তি শাপলা ফুল, গাছে গাছে শেফালী, জুঁই, মালতী, টগর, কামিনী আর ক্যাম্পাসজুড়ে শরতের স্মারক কাশফুল যেন সেজে ওঠে শরৎকে বরণ করে নিতে। শরতকে বরণ করে নিতে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা সহ দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রঙ্গণে।বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, শরৎ মানেই কাশফুল, নীল আকাশ আর দিগন্ত জোড়া সবুজের সমারোহ। আর কাশফুল হলো শরৎ, প্রকৃতি এবং বাংলার মানুষের এক চিরন্তন সঙ্গী। এটা কাউকে বিমর্ষ করে না। কাঁশফুলের সৌন্দর্য আমাদের মনের সৌন্দর্যকে সমৃদ্ধ করে।

ক্যাম্পাসের শরৎ উপভোগ করতে করতে কখন যে প্রকৃতির আকাশে সন্ধ্যার আভা নেমে আসে বুঝতেই পারা যায় না। কাঁশবনেও যেন নেমে আসে বেলা শেষের স্তব্ধতা। এই স্তব্ধতার সুযোগে প্রতিদিন সূর্য মামাও বিদায় জানাতে পিছপা হয় না।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, গণবিশ্ববিদ্যালয়, নামা অঞ্চলসহ আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে শরৎ এর শুভ্রতা ছড়াচ্ছে কাঁশফুল। প্রতিদিন এসব স্থানে কাঁশফুলের সঙ্গে সক্ষতা গড়তে ছুটে আসছে প্রকৃতিপ্রেমি মানুষগুলো

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন