শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধান শুরু

বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধান শুরু

‍দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন

হঠাৎ করেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অংশে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) কমিটি তদন্ত সংস্থার প্রধান এবং পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক (পি এন্ড ডি) ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী বলেন, আমরা বুধবার (আজ) সকালে গ্রিড বিপর্যয়ের সম্ভাব্য কারণ খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত শুরু করেছি। খবর বার্তা সংস্থা ইউএনবির।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে ২টি পৃথক তদন্ত কমিটি করা হয়। একটি কমিটি করা হবে বিদ্যুৎ বিভাগের নিজস্ব। এছাড়া স্বতন্ত্র একটি তদন্ত কমিটি। সবমিলে তিনটি কমিটি করা হয়।

এদিকে, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি করেছে। পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক (পি অ্যান্ড ই) মো. ইয়াকুব ইলাহীকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী শুক্রবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৫ মিনিট থেকে গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ প্রায় সব অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ৫ ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৭টা থেকে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ আসতে শুরু করে।

এর আগে দেশব্যাপী গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সংস্থাটি। এর মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি), বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং অন্যান্য বিদ্যুৎখাতের সংস্থার প্রতিনিধিরা। পরবর্তীতে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি যিনি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে গ্রিড সিস্টেমের পরামর্শক হিসাবে কাজ করেছেন তাকে কমিটিতে অতিরিক্ত সদস্য হিসেবে যুক্ত করা হয়। ইয়াকুব জানান, কমিটি গ্রিড ভেঙে পড়ার কারণ চিহ্নিত করতে সাবস্টেশন ও পাওয়ার স্টেশন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করবে।

আরও পড়ুনঃ  চিতা বাঘের দাম উঠল ১০ লাখ

সরকারি সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটিকে তদন্ত শেষ করতে তিনদিন সময় দেয়া হয়েছে। ইয়াকুব বলেন, এটির উপসংহারে পৌঁছাতে আরও সময় লাগতে পারে, কারণ এতে গ্রিড সিস্টেমের অনেক প্রযুক্তিগত সমস্যা জড়িত।’

পিজিসিবি এবং বিপিডিবি কর্মকর্তারা মনে করেন, মঙ্গলবারের গ্রিড বিপর্যয় আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ আন্তঃসংযোগ ট্রান্সমিশন লাইনের কোথাও থেকে শুরু হয়েছিল যার ফলে সারা দেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ব্যাপকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ৩ ঘণ্টার নিরলস প্রচেষ্টার পর পিজিসিবি প্রথমে কল্যাণপুর গ্রিড সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ চালু করতে সফল হয় এবং পরে বিকাল ৫টায় রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবন ও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করে।

ধীরে ধীরে এলাকার অন্যান্য অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা হয় এবং রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে সারা দেশে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়। পিজিসিবি কর্মকর্তারা জানান, আবহাওয়া গরম না থাকায় মঙ্গলবার দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। বাংলাদেশের জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয়ের সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। সেসময় সারাদেশ ১৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন