ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দিল শস্য ক্ষেতে

শস্য ক্ষেতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভালোবাসার নিদর্শন। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের পাড়াখলাবলা গ্রামের আব্দুল কাদির চিত্রকলার আলোকে বীজ বপন করে গড়ে তুলেছেন নকশা সম্বলিত ফসলের এই ক্ষেত।

‘বন্ধুমহল’ নামের ক্লাবের সহায়তায় ৩৫ শতক জমিতে হাল চাষ করে কৃষক আব্দুল কাদির তার কৈশোরের ভালোবাসার প্রতি সম্মান জানিয়েছেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে পাওয়া রবি শস্য সরিষার প্রদর্শনী প্লটে বারী-১৫ জাতের সরিষা বীজ বপন করে তিনি এই নকশা সম্বলিত ফসলের ক্ষেতটি তৈরী করেছেন।

ক্ষেতের দুই পাশে রয়েছে দুটি নৌকা, জাতীয় ফুল শাপলা ও চার কোণে চারটি হার্ট চিহ্ন। আর ক্ষেতের একেবারে মাঝখানে রয়েছে একটি বড় হার্ট চিহ্ন। বড় হার্টটির ভেতরে রয়েছে কৃষক আব্দুল কাদিরের নাম।

আরও পড়ুন: অনাবাদি সুনামগঞ্জের ৭ হাজার হেক্টর জমি

দৃষ্টিনন্দন এই ক্ষেত তৈরী করার ব্যপারে আব্দুল কাদির বলেন, এর পেছনে একটি মজার গল্প রয়েছে। গল্পটি হলো কিশোর বয়সে উপজেলার সোহাগী গ্রামের এক কিশোরীর প্রেমে পড়েছিলাম। তখন সেই প্রেমের সেতু বন্ধন রচিত হয়েছিল চিঠির মাধ্যমে। প্রেমিকা আমাকে যখন চিঠি লিখতো তখন চিঠির চার কোণে চারটি এবং মাঝখানে একটি বড় লাভ চিহ্ন এঁকে দিতো। লাভ চিহ্নের ভেতরে লেখা থাকতো প্রেমিকার ও আমার নাম। কিশোর বয়সের সেই লাভ চিহ্নকে ফসলের জমিতে ফুঁটিয়ে তুলে ভালোবাসার প্রতি সম্মান দেখালাম।

কাদির আরো বলেন, আমার প্রেমিকার নাম মকসুদা বেগম। ভালোবেসে তাকেই বিয়ে করে সুখে সংসার করছি। আমাদের সংসারে এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। মাকসুদা আমার কাছে মমতাজের মত। সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রীর ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ পৃথিবী বিখ্যাত সুরম্য তাজমহল তৈরী করেছিলেন। আমি গরীব, আমার সামর্থ্য নেই, কিন্তু আমার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কমতি নেই। তাই তাজমহল বানাতে না পারলেও জমিতে সেই লাভ চিহ্নের নকশা এঁকে প্রেমের নিদর্শন হিসেবে প্রেয়সীকে লেখা চিঠির মতোই নিজের জমিতে প্রেমপত্র এঁকেছি।

জমিতে নৌকা এবং শাপলা আঁকা নিয়ে কাদির বলেন, নৌকা আমি ভালোবাসি। নৌকা হলো আমার প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা ও গণমানুষের প্রতীক। শাপলা হলো আমাদের জাতীয় ফুল। ফুলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই শাপলা আঁকা।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, কৃষক আবদুল কাদির মানসিক ভাবনার সফল বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন নিজের ফসলের মাঠে। তার ব্যতিক্রমী উদ্যোগটি প্রশংসনীয়।

 

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস

সংবাদটি শেয়ার করুন