শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সানিয়াজানে ভাঙন---

বসতবাড়ি-ফসলিজমি রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ জরুরি

বসতবাড়ি-ফসলিজমি রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ জরুরি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় হঠাৎ ভাঙনের খেলায় মেতেছে সানিয়াজান নদী। গত তিন বছর ধরে বসতভিটা, ফসলিজমি, রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও স্থাপনা। চলতি বছরের কয়েকদফা বন্যায় সানিয়াজান নদীর পানির বৃদ্ধিতে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। ভাঙনরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভারত থেকে বয়ে আসা সানিয়াজান নদীটি হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া থেকে সানিয়াজান ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার নদী পথের দু’ধারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের দাবি অবৈধভাবে বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিবছর সানিয়াজান নদীর ভাঙনে ফসলি জমি,বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙ্গনের মুখে পড়ছে। বিশেষ করে ফকিরপাড়া ইউনিয়নের উত্তর দালাল পাড়া গ্রামের মিস্ত্রীপাড়া, দালালপাড়া, বাউরা ইউনিয়নের নাওহাট, এলাকায় নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিলীন হতে শুরু করেছে চলাচলের একমাত্র রাস্তা, ফসলি জমি, স্থাপনা। দীর্ঘদিন ধরে নদীর বাঁধের ব্যবস্থা না হওয়ায় দিশেহারা পড়েছে ওই এলাকার মানুষ। স্থানীয়রা  দ্রুত বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান। একটি বাঁধ হলেই ফসলি জমি, বসতভিটা রক্ষা পাবে।

চলতি বছর সানিয়াজান নদীর কয়েক দফা বন্যা ও নদীর ভাঙনে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের উত্তর দালালপাড়া গ্রাম থেকে সানিয়াজান ইউনিয়নের সানিয়াজান ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটারের ৫টি পয়েন্টে সানিয়াজান নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়েছে বসতভিটা, ফসলিজমি কবরস্থানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। হুমকির মুখে রয়েছে উত্তর দালাল পাড়া মিস্ত্রীপাড়া এলাকার একটি সড়ক। সড়কটি নদীর গর্ভে চলে গেলে প্রায় তিন হাজার মানুষের চলাচলের কষ্টকর হয়ে পড়বে। ভয়াবহ ভাঙনে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। স্থানীয়রা সানিয়াজান নদীর ভাঙন ঠেকাতে কয়েকবার আবেদন করেও কাজে আসেনি।

আরও পড়ুনঃ  বাড়ছে তিস্তার পানি ভাঙছে মানুষের বাড়ি

দালালপাড়া মিস্ত্রিপাড়া গ্রামের হযরত আলীর বলেন, সানিয়াজান নদীতে একের পর এক রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ভেঙে যাচ্ছে। অতি দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা একটি বাঁধ চাই। বাঁধ হলে আমাদের সবকিছুই রক্ষা পাবে।

উত্তর দালালপাড়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা হানিফ উদ্দিন বলেন, সানিয়াজান নদীর ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় এমপি মহোদয়ের কাছে আবেদন করেছি। এক বছরেও তার কাজ শুরু হয়নি। গ্রামটি ও একমাত্র রাস্তাটি রক্ষা করতে খুব দ্রুত একটি বাঁধের প্রয়োজন। তা না হলে গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষের চলাচল ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের ছিট জমগ্রামে সাফিউল ইসলাম বলেন, সানিয়াজান নদীর নতুন ব্রিজ নাওহাট বাজারের এলাকায় নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে অনেক পাকা দোকান পাট ও ঘরবাড়ি ঝুকির মধ্যে পড়েছে।

ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, অত্র ইউনিয়নের সানিয়াজান নদীর বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কে অনুরোধ করেছি।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সানিয়াজান নদীর ভাঙ্গন দেখতে লোক পাঠানো হবে। পাশাপাশি ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নোট করে নিলাম আশা করি দ্রুত ব্যবস্থা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন