বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৌন্দর্য বাড়াতে অর্থ অপচয়

সৌন্দর্য বাড়াতে অর্থ অপচয়

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবেই কাজ বুঝে নিয়েছি: বিলাস চন্দ্র, উপসহকারী প্রকৌশলী, পাউবো, ডালিয়া

তিস্তা নদীর ওপর ডালিয়া ব্যারেজকে সম্প্রতি রং করা হয়েছে। দায়সারাভাবে ব্যারেজ রং করে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয় দেখানোর বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সৌন্দর্য বৃদ্ধির নামে অর্থ অপচয়ে সমালোচনাও শুরু হয়েছে। কাগজে কলমে নামমাত্র কাজ দেখিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে বালি বিস্ফোরক মেশিন (স্যান্ড ব্লাস্টিং) ও আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ডালিয়া ব্যারেজের রেলিং ও ৫২টি জলকপাট পরিষ্কার ও রংকরণ কাজে ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের যান্ত্রিক বিভাগ। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পায় মেসার্স ইউনাইটেড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সরজমিনে দেখা যায়, বালি বিস্ফোরক মেশিন ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে রং করার কথা থাকলেও ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক হাত দিয়ে ঘঁষামাজা করে রং করেছে ব্যারেজের জলকপাট ও রেলিং। স্থানীয়দের অভিযোগ, আধুনিক যন্ত্রপাতি বা স্যান্ড ব্লাস্টিং মেশিন ব্যবহার না করে বর্ষা মৌসুমে ব্যারেজটি হাত দিয়েই রং করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সর্বোচ্চ ১৫ জন শ্রমিক ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করেছে। ব্যারেজ রং, সংস্কার ও মেরামতের নামে প্রতিবছর এভাবে দায়সারা কাজ করা হয়, যাতে সরকারি অর্থের অপচয় হয়। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডালিয়া পাউবোর এক কর্মচারি জানান, নির্দেশনা না মেনে হাত দিয়েই ব্যারাজ রং করা হয়েছে। এতে ৩০ লাখ টাকাও ব্যয় হয়নি। কাজের পরিপত্র অনুযায়ী রং করলেও এতো টাকা খরচ হবে না। সেখানে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ।

আরও পড়ুনঃ  কেয়ার মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন বাতিল- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

এ ব্যাপারে কাজের ঠিকাদার জাফর আলম জানান, আমার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজটি সম্পন্ন করছেন আকুল চৌধুরী নামে এক সাব ঠিকাদার। আমি কাজের বিষয়ে কিছুই জানি না।

কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপসহকারি প্রকৌশলী বিলাস চন্দ্র হাত দিয়ে রং করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তা যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবেই কাজ বুঝে নিয়েছি। রংয়ের কাজে বালি বিস্ফোরক ও আধুনিক যন্ত্রপাতি কেন ব্যবহার হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, পারিপার্শিক কিছু কারণ ছিল। তবে এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। আপনি নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলুন।

এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী রুবাইয়াত ইমতিয়াজের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে ও বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মিলেনি। সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় লিখিত আবেদন করে তথ্য চেয়েও পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন