বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শ্রমিকের চমক-

জ্বালানি সাশ্রয়ী বাইক

জ্বালানি সাশ্রয়ী বাইক

তেল সাশ্রয়ী মোটরসাইকেল বানিয়ে চমক দেখালেন নাহিদ হাসান নাঈম (২২) নামে এক মোটর গ্যারেজ শ্রমিক। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সে পড়াশোনা করেছে। নেই কোনো কারিগরি জ্ঞান। নিজের মেধা খাটিয়ে মাত্র ১২ হাজার টাকা খরচ করে এক মাসের পরিশ্রমে সে একটি পুরোনো বাইসাইকেলকে মোটরসাইকেলে রূপান্তর করেছে।

মোটরসাইকেলটি ১ লিটার তেলে ৮০ কিলোমিটার পথ চলতে পারে। রাতে চালানোর জন্য মোটরসাইকেলটিতে লাইট ও মাইলেজ দেখার জন্য মিটারও লাগানো হয়েছে।

নাহিদ শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর ইউনিয়নের সন্নাসীরচর গ্রামের মো. আব্দুল মালেক ভান্ডারি ও নাজমুন্নাহার দম্পতির ছোট ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাহিদ দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার বাবা পেশায় একজন বাউল শিল্পী, মা গৃহিণী। ছোট থেকেই নাহিদ খুব চঞ্চল প্রকৃতির। সে এক সময় জুতা তৈরির কারখানায় কাজ করতো। পরে তার মা-বাবা বাড়ির পাশে তাকে একটি ছোট গ্যারেজ দিয়ে দেন। সেখানেই নাহিদ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও বাইসাইকেল মেরামত করে। তবে নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে সে তেল সাশ্রয়ী মোটরসাইকেল বানিয়েছে। তার বানানো মোটরসাইকেল দেখে বিস্মিত গ্রামবাসী। মোটরসাইকেলটি দেখতে গ্যারেজে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে মানুষ।

এ বিষয়ে নাহিদ বলেন, ছোট থেকেই মোটরসাইকেলের প্রতি আমার আলাদা আকর্ষণ কাজ করতো। তখন থেকেই ভাবতাম বড় হয়ে একটি মোটরসাইকেল বানাবো। গ্যারেজে কাজের ফাঁকে ফাঁকে মোটরসাইকেল বানানোর কাজ করতাম। মোটরসাইকেলটিতে আমার চলাচলে ব্যবহৃত একটি পুরোনো বাইসাইকেল, পুরাতন যন্ত্রাংশ এবং ফেলে দেয়া মোটরসাইকেলের জিনিসপত্র ব্যবহার করেছি। মোটরসাইকেলটি প্রতি লিটার তেলে কমপক্ষে ৮০ কিলোমিটার পথ যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  সাধারণ ছুটিতেও চলবে সকল শুল্ক স্টেশনের কার্যক্রম

চরশেরপুর ইউনিয়নের যোগিনীমুড়া নামাপাড়া গ্রামের আলমগীর আল আমিন বলেন, নাহিদ যে মোটর সাইকেলটি বানিয়েছে তা বর্তমানে খুব সাড়া ফেলেছে। আমিও একটা বানাতে আগ্রহী। কারণ তেলের যে দাম বেড়েছে তাতে বড় মোটরসাইকেল চালানো খুব মুশকিল।

কামারের চর ইউনিয়নের ফয়েস্তির চর গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি খবরটি কামারের চর বাজারে শুনেছি। মোটর সাইকেলটি দেখে খুব ভালো লাগছে। চমৎকার একটি উদ্ভাবন।

নাহিদের বাবা মো. আব্দুল মালেক ভান্ডারি বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমার তিন ছেলেই ওই গ্যারেজে কাজ করে। নাহিদ যে মোটরসাইকেলটি বানিয়েছে, তা দেখতে প্রতিদিন লোকজন ভিড় করছে। সহযোগিতা পেলে আরও ভালো কিছু করতে পারবে আমাদের নাহিদ।

কামারেরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আমার ইউনিয়নের সন্নাসীরচর গ্রামের বাসিন্দা নাহিদ। তার প্রতিভা দেখে আমরা ইউনিয়নবাসী অবাক। তাকে আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন। আমি নাহিদের খোঁজখবর নিয়েছি। তাকে আমার পরিষদ ও ব্যাক্তিগত পক্ষ থেকে সহযোগিতা করবো। একই সঙ্গে নাহিদকে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবো।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন