শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাশ্রয়ী মিটারে আগ্রহ কম

সাশ্রয়ী মিটারে আগ্রহ কম

আবাসিকে মিটারবিহীন গ্যাস সংযোগে দুই চুলার জন্য ১ হাজার ৮০ এবং এক চুলার জন্য ৯৯০ টাকা গুণতে হয় গ্রাহককে। একই ধরনের সংযোগের ক্ষেত্রে গড়ে মাত্র ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা গুনেন প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারীরা। অর্থাৎ মিটারবিহীন ও মিটার ব্যাবহারকারী গ্রাহকদের খরচের তফাৎ প্রায় অর্ধেক। এমন পরিস্থিতিতে প্রিপেইড মিটারের জন্য গ্রাহকদের যেখানে হাহাকার করার কথা সেখানে চট্টগ্রামে দেখা মিলছে উল্টো চিত্র।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ১ লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার দিতে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে আবেদন নিচ্ছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। আবেদন গ্রহণ শুরুর ৬ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত আবেদন করেছেন ৭৪ হাজার ৮০০ গ্রাহক। এরমধ্যে গত ১ মাসে আবেদন জমা পড়েছে মাত্র ১ হাজার। প্রিপেইড মিটারের জন্য প্রত্যাশা অনুযায়ী আবেদন জমা না পড়ায় ‘বিস্মিত’ পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারাও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন- আবাসিকে বাড়ির মালিকের নামে সংযোগ দেয়া হলেও বিল দেন ভাড়াটিয়ারা। বাড়তি খরচ ভাড়াটিয়ারই হয়। আবার মিটার পেতে আবেদন করলে প্রতিটি চুলার জন্য রাইজার-রান্নাঘর পর্যন্ত জিআই লাইন গ্রাহককে নিজ খরচে স্থাপন করতে হবে। এতে ব্যয় বাড়বে বাড়ির মালিকের। তাই মিটার পেতে মালিকদের গরজ নেই। এছাড়া যথাসময়ে মিটার স্থাপন নিয়েও সন্দিহান অনেকে। ফলে আবেদনে সাড়া মিলছে কম।

‘আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১ লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনার লক্ষ্যে কাজ করছে কেজিডিসিএল। ২৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৩ এর জুন পর্যন্ত। ব্যয়ের পুরোটাই কেজিডিসিএল’র নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে। ২০২১ এর ১৮ মে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনঃ  সাঁকো দিয়ে নদী পার

এরপর প্রকল্পটির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে কেজিডিসিএল। তবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের দরপত্র প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হলে প্রকল্পে ধীরগতি আসে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য ফের দরপত্র আহ্বান করা হয়। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের মে মাসে ডিটিসিএলকে আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয় কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ।

গত ১৪ আগস্ট মূল প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর দরপত্র খোলা হবে। ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ফের দরপত্র আহ্বানের মতো দীর্ঘসূত্রতা তৈরি না হলে আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি নাগাদ মাঠ পর্যায়ে মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হবে। যারা প্রথম দিকে প্রিপেইড মিটার পেতে আবেদন করেছেন তাদেরই ক্রমানুযায়ী প্রথম পর্যায়ে মিটার স্থাপন করে দেওয়া হবে।

পেট্রোবাংলার একজন কর্মকতা জানান, প্রিপেইড মিটারের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে আবেদন নেওয়াসহ বেশ কিছু কাজ আমরা এগিয়ে নিয়েছি। ঠিকাদার নিয়োগ হয়ে গেলে মিটার স্থাপনের কাজ শুরু করতে বেশি সময় লাগবে না। আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি নাগাদ মিটার স্থাপনের কাজ শুরু করতে পারবো। ২০২৩ এর জুনের মধ্যে সব মিটার না পারলেও উল্লেখযোগ্য মিটার স্থাপন করবো।

সূত্র জানায়- গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার পেতে অনলাইনে আবেদন করতে হবে ঢ়ৎবঢ়ধরফ.শমফপষ.মড়া.নফ ওয়েব ঠিকানায়। কেজিডিসিএল’র অনলাইন রেজিস্ট্রেশনকৃত আবাসিক গ্রাহকরাই প্রিপেইড মিটার স্থাপনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের আগে গ্রাহককে সব বকেয়া বিল হালনাগাদ পরিশোধ করতে হবে। প্রতিটি চুলার জন্য রাইজার থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত জিআই লাইন গ্রাহককে নিজ খরচে স্থাপন করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  ২৩ দিনে ক্ষতি অর্ধকোটি টাকা

জিআই লাইনে লিকেজ হলে কেজিডিসিএল’র অনুমোদিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে মেরামত করতে হবে। রান্নাঘরে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। আবেদনের সাথে এনআইডি সংযুক্ত করতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়ায় সব তথ্য যথাযথভাবে উল্লেখ করতে হবে। আবেদনপত্রের সব তথ্য ফর্ম থেকে নিতে হবে। আবেদনপত্র যথাযথ না হলে আবেদন বাতিল করা যাবে। আবেদনক্রম অনুসারে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন