শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অ্যাম্বুলেন্স সংকটে দুর্ভোগ

অ্যাম্বুলেন্স সংকটে দুর্ভোগ
  • জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় মোট সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ৫শ জনেরও বেশি। কিন্তু নয় হাজারেরও অধিক মানুষের সেবার জন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স। অ্যাম্বুলেন্স সংকটের কারণে নানা দুর্ভোগে পড়তে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ সকলকে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নানা সময়ে অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আশ্বাস দিলেও বাস্তবে এর প্রতিফলন না ঘটায় চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। সর্বশেষ গত ১১ মে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি একটি অ্যাম্বুলেন্স দেয়ার ব্যাপারে ভাববেন বলে জানিয়েছেন। এর আগে বহুবার অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বাড়ানোর আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ময়মনসিংহ সদর হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। এছাড়াও আগের চেয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষক শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এমন অবস্থায় একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্সে কখনোই কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে নজর দেয়া অত্যন্ত জরুরি।

বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. তপন কুমার সরকার বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চারটি হল মিলিয়ে আবাসিক শিক্ষার্থীই রয়েছেন প্রায় তিন হাজার। এছাড়াও আশেপাশের মেসগুলোতে রয়েছেন অনেকে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী তো আছেনই। কাজেই একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্সে কখনোই কাঙ্ক্ষিত সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি।

একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেছে, একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্স হওয়ায় সবসময় সেবা পাওয়া যায় না। জরুরি অবস্থায় যোগাযোগ করে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি এমন ঘটনাই বেশি। কেননা রোগীর চাপ অনেক বেশি থাকে। তাই তাদের দাবি, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হোক।

আরও পড়ুনঃ  দুই বছরেও চালু হয়নি বটুলি বর্ডার হাট

আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল প্রামাণিক বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি একজন রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে সেই সময় অন্য কেউ অসুস্থ হতেই পারে। কারণ কে কখন অসুস্থ হবে এটা তো নির্দিষ্ট করে বলা যায় না।

আর এমনটা হলে সময়মতো হাসপাতালে না নেয়ার কারণে বড় কোনো দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। আরেক শিক্ষার্থী সামিরা আক্তার ঈশিতা বলেন, কিছুদিন আগে বাংলা বিভাগের এক বান্ধবী অসুস্থ হয়। অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করে জানা যায় যে কোনো একজন শিক্ষক অসুস্থ, তাই তাকে নিয়ে হাসপাতাল গিয়েছে। একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্স শিক্ষক শিক্ষার্থী সবাই মিলে ব্যবহার করতে হয়। তাই প্রয়োজনের সময় অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ার খবরই বেশি শুনি। তাই অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করে জীবন বিপণ্ণ করার ঝুঁকি না নিয়ে অন্য উপায় খোঁজে সবাই।

পরিবহন প্রশাসক ড. আরিফুর রহমান বলেন, ‘সেবা দিতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়। রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেই যে কাকে আগে অ্যাম্বুলেন্স দেয়া যায়। তখন অনেককেই ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। ভবিষ্যতে ফান্ডিং পেলেই এ সঙ্কট দূর করতে পদক্ষেপ নেব।’ এত আশ্বাসের পরেও কেন বিলম্ব হচ্ছে -জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব আশ্বাস তো শুরু থেকেই পেয়ে আসছি। কিন্তু কোনো আশ্বাসেরই বাস্তবায়ন হচ্ছে না।’ এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন