শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডলারের অজুহাত পামতেলেও

ডলারের অজুহাত পামতেলেও

বিশ্ববাজারে পাম তেলের দাম নিম্নমুখী হলেও চট্টগ্রামে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জে একদিনের ব্যবধানে পাম তেলের দাম বেড়েছে মণপ্রতি ৮শ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, এটা তেল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজি। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলারের দামের কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ছে, এই ইস্যুতে দাম বাড়ানো হচ্ছে। অথচ দেশে ডলারের দাম কমে আসছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পাম তেলের দাম কমলেও ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত পরিমাণ আমদানি করতে পারেননি। তাই বাজারে সরবরাহ কমে গেছে।

চট্টগ্রামের বনেদি পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার প্রতিমণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৯০০ টাকায়। গত মঙ্গলবার সেই তেল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৩০০ টাকায়। তার আগের দিন অর্থাৎ রবিবার প্রতি মণ পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ টাকায়। সেই হিসেবে দুই দিনের ব্যবধানে পাম তেলের দাম মণপ্রতি বেড়েছে ৮০০ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলেন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার পরেও পাম তেলের দাম বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক। আমি গত সোমবার খাতুনগঞ্জে তেল কিনতে গিয়ে হতভম্ব হয়ে গেছি। বিকেল ৪টায় প্রতি মণ পাম তেলের দাম ছিল ৪ হাজার ৯০০ টাকায়। মাত্র ৪ ঘণ্টা পর সেই তেলের দাম হয়ে গেছে ৫ হাজার ৩০০ টাকা। জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের সোনা মিয়া মার্কেটের তেল ব্যবসায়ী আবু বক্কর বলেন, তেলের বাজারে কোনো ধরণের সিন্ডিকেট হচ্ছে না। আসলে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। তাই দাম উঠানামা করছে।

আরও পড়ুনঃ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রশংসা করে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির চিঠি

খাতুনগঞ্জের একাধিক তেল ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) শ্লিপ। তেল কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে।

আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে তেল ও চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়। বলা যায় ডিও কারসাজির কারণে মাঝে মাঝে পণ্যের দাম আকাশচুম্বি হয়ে উঠে। এই সুযোগে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন