শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেঘ খুঁজছেন আমনচাষিরা

মেঘ খুঁজছেন আমনচাষিরা

ক্ষেত ফেটে চৌরির, বিবর্ণ আমন চারা

  • ডিজেলের বেশি দামে সেচ সংকট

কাঠফাটা তপ্ত রোদে ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ভাদ্র মাসের শুরুতেই চৈত্র মাসের মতো খরা। বৃষ্টির দিকে চেয়ে আছে মানুষসহ প্রাণিকূল। লাগানো জমিতে ধান বাঁচাতে মহাদুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। শেরপুরে খরার তীব্রতায় রোপা আমন ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। প্রখর রোদে সব শুকিয়ে যাচ্ছে। রোদে পুড়ে বিবর্ণ হয়েছে রোপা আমন ধানের চারাগুলো। এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষিবিভাগ সেচযন্ত্র চালুর মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে ধান রোপণের পরামর্শ দিয়েছেন।

আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষক সময়মত জমিতে রোপা আমন রোপণ করতে পারেননি। দেরি করে রোপণ করলেও বৃষ্টির অভাবে রোদে পুড়ে বিবর্ণ হয়েছে রোপা আমন ধানের চারাগুলো। ফেটে চৌচির হচ্ছে আবাদি জমি।

শেরপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, পানির অভাবে রোপা আমন ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে আছে। বৃষ্টি না থাকায় খরায় পুড়ছে জনপদ। এ সময় রোপনকৃত জমিবৃষ্টির পানিতে জলমগ্ন থাকার কথা থাকলেও আবাদি জমি ফেটে হয়েছে চৌচির। এ কারণে রোপণকৃত আমন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টির জন্য দিন গুণছেন তারা। আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন কখন হবে বৃষ্টি।

উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর, যোগিনীবাগ ও শহরের মোবাররকপুর, দমদমা কালিগঞ্জ ও নৌহাটাসহ একাধিক গ্রামে মাঠে এখন রোপা আমন ধানের জমি সবুজে ভরে গেছে। তবে পানির অভাবে অধিকাংশ ধানক্ষেত ফেটে চৌচির। প্রচণ্ড তাপদাহে ধান গাছ বিবর্ণ হচ্ছে। সদ্য রোপণ করা ধানের চারা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। চরাঞ্চলের কৃষকরা বৃষ্টির অপেক্ষায় থেকে দেরিতে করে হলেও বাধ্য হয়ে সেচ দিয়ে আমন রোপণ শুরু করেছেন। এতে তাদের বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  জলাবদ্ধতায় আমনের ক্ষতি

মোহাম্মদপুর ও যোগিনীবাগ গ্রামের কৃষক আকাব্বর হোসেন, ফরিদ উদ্দিন ও কালাম জানান, এ বছর চাহিদা অনুযায়ী বৃষ্টি না হওয়ায় স্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক মোটর চালিয়ে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। এতে তাদের বাড়তি খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি আমন মওসুমে শেরপুর সদর উপজেলায় ২২ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, চলতি মওসুমে তুলনামুলক কম বৃষ্টি হয়েছে। যা আমন চাষের উপযোগী নয়। প্রচন্ড তাপদাহে আমন ক্ষেত ফেটে যাওয়ায় এবং তাপদাহ মোকাবেলা করে আমন চাষ করার বিষয়ে কৃষকদের সম্পূরক সেচের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন