শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজমিরীগঞ্জে বন্যা

সড়কের ক্ষতি ১৭ কোটি

রাস্তাগুলো মেরামতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে : আহমেদ তানজীর উল্লাহ সিদ্দিকী, প্রকৌশলী, আজমিরীগঞ্জ

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে সাম্প্রতিক বন্যায় সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার রাস্তা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে যা টাকার পরিমাণে দাঁড়ায় ১৭ কোটি টাকা। তাছাড়া উপজেলার সঙ্গে বিভিন্ন সংযোগসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোর আরসিসি প্লেট উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থানে আবার স্রোতের তোড়ে ভেসে গেছে সড়কের ঢালাই করা অংশ। এছাড়াও সড়কগুলোর অনেক অংশেই এখন দেখা দিয়েছে ধস। এতে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন ওইসব এলাকার সাধারণ যাত্রীরা। বিশেষ করে পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সড়ক পথে মালামাল সরবরাহ করতে না পেরে নৌকাযোগে মালামাল আনা নেয়া করতে হচ্ছে তাদের। যার ফলে একদিকে যেমন অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে অন্যদিকে সময়ও বেশি লাগছে। তাই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের দাবি উপজেলাবাসীর।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজমিরীগঞ্জ ফিরোজপুর ভায়া বদলপুর সড়কটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সড়কের অন্তত ৪ থেকে ৫টি স্থান ভেঙ্গে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আরসিসি ঢালাই করা অংশগুলো উঠে গিয়ে সড়কের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পড়ে রয়েছে। এছাড়াও সড়কটি বিভিন্ন অংশে অন্তত আরও অর্ধশতাধিক ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সড়কটির বদলপুর সংলগ্ন সুইচ গেইট অংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার সময় ওই অংশ দিয়ে প্রবল স্রোত অব্যাহত থাকায় গেটটির দু’পাশেই সড়কে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। যার ফলে সেখান থেকে মাটি সরে গিয়ে সড়কের সঙ্গে গেইটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুনঃ  পিরোজপুরে আরো ৩ জন সহ মোট আক্রান্ত ৪

এদিকে, আজমিরীগঞ্জ-কাকাইলছেও সড়কটিরও একই অবস্থা। বন্যার সময় সড়কটি তলিয়ে যাওয়ার কারণে সড়কের বিভিন্ন অংশে ফাটলের পাশাপাশি ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়। ঢালাইয়ের নিচের মাটি সরে যাওয়ার কারণে সড়কের অনেক অংশ দেবে গেছে। এছাড়াও আজমিরীগঞ্জ পৌরসভাধীন সমীপুর কুমারহাটি গ্রাম থেকে ১নং সদর ইউনিয়নের রনিয়া গ্রাম পর্যন্ত সড়কটি ও রনিয়া গ্রাম থেকে কাকাইলছেওয়ের কালনীপাড়া পর্যন্ত সড়কটিও বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। যার ফলে ওই এলাকা দিয়ে যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়েছেন ওইসব এলাকার হাজারো জনসাধারণ।

ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সরকার জানান, আমাদের এলাকাটি ভাটি এলাকা। যার ফলে বন্যার প্রথমেই আমাদের এলাকার অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট ডুবে যায়। কিন্তু এবারের বন্যায় আমাদের উপজেলার সড়ক পথগুলোর বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাওর এলাকা হওয়ায় পানির নিচে তলিয়ে যায় অধিকাংশ সড়ক। যার ফলে বন্যার স্রোতে ভেসে গেছে সড়কের অনেক ঢালাই করা অংশ। তিনি বলেন, পানি কমার পর থেকেই সড়কের নিচে মাটি সরে যাওয়ায় দেবে যেতে শুরু করেছে সড়কগুলো। যে কারণে যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তাই দ্রুত সড়কগুলো পুর্নমেরামতের দাবি জানান তিনি। ব্যবসায়ী কুদ্দুছ মিয়া জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। না হলে আমরা ব্যবসায়ীদের বেশি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মালামাল আনা নেয়ার ক্ষেত্রে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। টমটম চালক জুয়েল মিয়া জানান, সড়কগুলো ভেঙে এমন অবস্থা হয়েছে যে এখন টমটমসহ যানবাহন চলানো যাচ্ছে না। সড়কের অনেক অংশে বাঁশ দিয়ে সেতু বানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আহমেদ তানজীর উল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, বন্যায় উপজেলার ৬ থেকে ৭ কিমি. রাস্তা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার পরিমাণে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হবে’। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো মেরামতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন