রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘ভারাক্রান্ত’ প্রাথমিক বিদ্যালয়

‘ভারাক্রান্ত’ প্রাথমিক বিদ্যালয়
  • কালিয়াকৈরে ২৪ প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষককে দিয়েই চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাজ
  • উপজেলার শিক্ষা অফিস বলছে সরকার নিয়োগ দিলেই মিলবে সমাধান

বিদ্যালয়ে পাঠদানসহ শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার নেতৃত্ব দেন প্রধান শিক্ষক। যদিও বছরের পর বছর প্রধান শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ পদটি শূন্য রেখেই সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই চলছে গাজীপুর কালিয়াকৈর উপজেলার ২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক কার্যক্রমের নেতৃত্ব ও তদারকিতে বেশ স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার শিক্ষা অফিস ও বিভিন্ন বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলায় ১২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। নিয়ম অনুয়ায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও এর মধ্যে বদলি ও অবসরজনিত কারণে লতিফপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সফিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাহেবাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মেদীআশুলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। যে কারণে বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষক দিয়েই  ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক না থাকায়  সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে জোড়াতালির মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করায় তাতে গতি আসছে না। শিক্ষকশূন্যতাসহ নানাবিধ সংকটের কারণে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের ভর্তি করাতে আগ্রহ হারাচ্ছে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা। আর নিম্নবিত্ত শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা সরকারি প্রাথমিকে ভর্তি হলেও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও তত্ত্বাবধান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমন অবস্থায় দ্রুত শূন্য পদে প্রধান ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের প্রতি নিবিড় তত্ত্বাবধান বাড়াতে না পারলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংকট চরম আকার ধারণ করতে পারে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।

আরও পড়ুনঃ  রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৩ লাখ ডলার দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া

এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বাদ দিয়ে দাপ্তরিক কাজে ব্যাংকের পাশাপাশি সভা-সমাবেশ, ট্রেনিং, বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সময় উপজেলার শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন অফিসে যেতে হয়। যে কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠদান থেকে ব্যাহত হচ্ছে।

জানা যায়, ২০১৪ সালের পর আর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক পদায়ন করা হলেও তার পর থেকে আর প্রধান শিক্ষক পাওয়া যাইনি। এছাড়াও কিছু কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষক কম থাকায় পাশের বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান। কৃর্তপক্ষ বলছে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হলেই এ সমস্যার সমাধান হবে।

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের শূন্যতায় অনেকটা দায়সারাভাবে সহকারী শিক্ষকরা পাঠদানের নামে সময় পার করছেন। শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পাচ্ছে না। পাঠ্যসূচি অনুযায়ী পড়ালেখা নিয়েও হতাশায় রয়েছেন তারা। এসব প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনেও পিছিয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা।

 উপজেলার মেদীআশুলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.আমির হোসেন বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করায় দাপ্তরিক কাজসহ নানা কাজ থাকলেও নিয়মিত নিজের নির্ধারিত ক্লাস নিতে চেষ্টা করি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমিতা ইসলাম জানান, আমাদের ২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। সরকার নিয়োগ দিলে আমরা প্রধান শিক্ষক পাবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন