শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অবৈধ বালু উত্তোলন

দিনে বন্ধ রাতে চালু

দিনে বন্ধ রাতে চালু
  • তহশিলদার-ইউএনও বিপাকে!

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদীভাঙন বেড়ে বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি ও বসতবাড়ি। তবে, বালু উত্তোলণে প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। রাস্তা ও বসতভিটা ধ্বসের শঙ্কা। এ ছাড়া ট্রাক্টর দিয়ে বালু পরিবহন করায় রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন নীরব বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এদিকে, অনেকবার বলার পর দিনের বেলায় ঘটনাস্থলে তহশিলদার পাঠানো হলেও রাতে পুনরায় আবার চালু আবার মেশিন।

উপজেলার ভোটমারী ও তুষভান্ডার এলাকায় তিস্তা নদীর ছয়টি পয়েন্টে ট্রাক্টর দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে নদী তীরবর্তী ও আশপাশের এলাকা থেকে বালু ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে বালু তুলছেন। তারা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে হাজার হাজার ফুট পাইপ টেনে অবাধে বালু তুলছেন। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০টি ট্রাক্টর বালু নিয়ে মহাসড়কে চলাচল করছে।

এ বিষয়ে তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর ইসলাম আহমেদ বলেন, আমার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আমাকে বেশ কিছু মানুষ বলছে আজ ক’দিন ধরে। এতে বিভিন্ন রাস্তা ঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের লোককে কল দিলে শুধু বলে, দেখছি, বালু আর তোলা বন্ধ হয় না।

স্থানীয় লোকজনের মতে, ইতোপূর্বে বদলিকৃত উপজেলা নিবার্হী কমর্কতা রবিউল হাসান এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন দায়িত্ব পালনকালে এ উপজেলায় বাল্যবিবাহ, মাদক, বাজার মনিটরিং ও অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ মোবাইল কোট পরিচালনা করায় এ উপজেলার এ সকল অপরাধ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ  নেত্রকোনায় কমছে বনভূমি

এ বিষয়ে ভোটমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরাদ হোসেন মাষ্টার বলেন, ‘তিস্তা নদী থেকে ট্রাক্টর দিয়ে বালু পরিবহন করায় আমার এলাকার কাঁচা-পাকা সড়কগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমি নিজেই ডিসি স্যার ইউএনও স্যার সবাইকে বলেই চলছি এই বালুর তোলার বেপারে ।

স্থানীয়দের অভিযোগ এ সকল বালু ব্যবসায়ীদের খুঁটির জোর আসলে কোথায়। তারা আরও জানান, এ উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসরাত জাহান ছনি যোগদানের পর থেকে এ উপজেলায় এদের বিরুদ্ধে কোনো ভ্রাম্যমাণ পরিচালনা না করায় এ সকল অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীরা দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে ওঠার অভিযোগ রয়েছে। অথচ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে।  তবে, আইনের প্রয়োগ নেই। শুধু তাই নয় বেড়েছে বাল্যবিবাহ ও মাদকসেবীদের তৎপরতা।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ইসরাত জাহান ছনি বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো ভ্রাম্যমাণ মোবাইল কোট পরিচালনা করা হয়নি। আমরা অভিযোগ পেলে এদের বিরুদ্ধে রেগুলার মামলা দায়েরের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ইউএনও মো. আব্দুল মান্নান বালু ব্যবসায়ীদের করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এর মধ্যে কোনো বালু উত্তোলণের সংবাদ পাইনি। পেলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে সময় স্বল্পতার কারণে অভিযান কম পরিচালিত হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন