আন্তর্জাতিক ও দেশের অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে বাংলাদেশের অবস্থা অনেক দেশের চেয়ে ভালো আছে। কেননা খবর বেরিয়েছে মূল্যবৃদ্ধির কারণে যুক্তরাজ্যের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে। অথচ আমরা এখনো এ কথা মনে করতে পারি না যে আমাদের দরিদ্রতার পরিমাণ আগের তুলনায় কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। এসব মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। মন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা পরিবর্তন হয়েছি, অনেক ভালো আছি এ কথা বলতে পারব না?
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘জাতির পিতার সাংবিধানিক নির্দেশনা বাস্তবায়নে, স্থানীয় সরকারের শাসন ব্যবস্থা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভা, দোয়া অনুষ্ঠান ও রক্তদান কর্মসূচির এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন।
এখন কেউ না খেয়ে আছে এমন প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ‘আগে তো খেতে পায়নি, এখন খেতে পায়। এখন আপনারা-আমরা ৩২ হাজার টাকা বেতন পাই, কিন্তু পরিবার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। আগে তো ৩ হাজার টাকা বেতন পেতেন। তখন একটি শাড়িই কিনতে পারতেন না। এখন ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীর মানুষ কষ্টে আছে। আমাদের ওপরও কিছুটা প্রভাব পড়েছে।’
দেশ কারও ওপর নির্ভরশীল নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), যাদের কাছ থেকে ঋণ নিই, তারা কেউ আমাদের চেহারা দেখে টাকা দেয় না। আমাদের থেকে অনেক সুন্দর দেশ আছে, সবার সুন্দর চেহারা, কিন্তু এক টাকাও তাদের ঋণ দেয় না। তাদের (বহুজাতিক ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান) ডেকেও নেওয়া যায় না। আমাদের এখানে ঘুরে, কারণ আমাদের সক্ষমতা আছে।’
তাজুল ইসলাম বলেছেন, আন্দোলনের নামে কেউ হামলা-ভাঙচুর ও বোমাবাজি করে জনজীবন অতিষ্ঠ করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আন্দোলন গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু এই অধিকারের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলার অধিকার কারো নেই। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শেষ বা ধ্বংস হয়ে গেলো, মানবতা ভূলুণ্ঠিত হলো বলে যারা চিৎকার করছেন, তারা প্রমাণ করে দেন কীভাবে দেশ শেষ হয়ে গেল?
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী আরও বলেন, বাজেট ঘোষণার আগে বিএনপির সাইফুর রহমান সাহেবরা ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্যারিস কনসোর্টিয়াম গিয়ে বসে থাকতো টাকার জন্য। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ট্র্যাডিশন বন্ধ করে দিয়ে নিজস্ব অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য গুরুত্ব দিয়েছেন। উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে দীর্ঘ মেয়াদি পথ নকশা তৈরি করেছেন। যার সুফল মানুষ ভোগ করছেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন অর রশীদ হাওলাদার। তিনি বলেন, দেশের যেকোনো অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় নিতে সংসদ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা কাজ করবেন। এ সময় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান।