শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দামের আগুনে পুড়ছে পকেট

সবজির দামে বঞ্চিত চাষি

চালের দাম বাড়ছে। সবজি, মাছ ও মুরগির বাজারেও পড়েছে জ্বালানি তেলের প্রভাব। বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশ ছোঁয়া। বাজারে পণ্যের দামের আগুনে পুড়ছে ক্রেতার পকেট।

মাঠের সবজি ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে দাম। জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে বেড়েছে পরিবহনের ভাড়া। যার কারণে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এমনিতেই মূল্যস্ফীতি ও ডলার সংকটে নিত্যপণ্যের দামে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। 

নিত্য দ্রব্যের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সবজি থেকে শুরু করে সব ধরণের নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম বেড়েছে। ক্রেতারা বাজারে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। দুশ্চিন্তায় পড়েছে নিম্নমধ্যবৃত্ত ও মধ্যবৃত্ত শ্রেণির মানুষ।

নিত্য প্রয়োজনিয় পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাল। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরপরই বেড়েছে পরিবহন ভাড়া। এর আগে প্রকৃতিক দুর্যোগের কারণে ধানের ফলন বিঘাপ্রতি ২ থেকে ৪ মণ কম হয়েছিল। সব মিলিয়ে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।

রাজশাহীতে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। মাঝারি মানের চাল পাইজাম ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। মোটা চাল স্বর্ণা ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এসব চাল ৫ থেকে ৬ টাকা কম দামে বিক্রি হয়েছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় তাতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সামনে চালের দাম আরও বাড়তে পারে।

শুধু চাল না, নিত্য প্রয়োজনীয় সব দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সপ্তাহের শেষ দিনে রাজশাহীর মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি সবজি, মাংস ও মাছের দাম বেড়েছে।

আরও পড়ুনঃ  করোনা সন্দেহে এলাকাবাসীর হাতে আটক প্রবাসী

রাজশাহীর বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। প্রতিটি সবজি ১০ থেকে ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে, ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে করোলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, ১০ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স, পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে এ সপ্তাহে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজিতে।

রাজশাহী মহানগরীর উপশহর কাঁচা বাজারে সবজি কিনতে আসা শরিফুল ইসলাম জানান, দিনে দিনে সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে যদি দাম বাড়তে থাকে তাহলে মাথা নষ্ট হয়ে যাওয়ার জোগাড়।

মহানগরীর শেখপাড়া এলাকার শাহিন। নগরীর একটি অটো রিকশা গ্যারেজে চাকুরি করেন। বেতন পান মাসে ১০ হাজার টাকা। শাহিন বলেন, বাড়িতে ৩ ছেলেমেয়ে, স্ত্রী। সংসার কি এ টাকায় চলে? অশান্তি বাড়ছে।

মাছের বাজারেও আগুন। ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, রুই মাছ কেজিতে ৭০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, পূর্বের দামের চেয়ে ৭০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বাটা মাছ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, ৩০০ টাকা কেজিতে বৃদ্ধি পেয়ে চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে একা ৬০০ টাকা, গত সপ্তাহের চেয়ে ১৫০ টাকা বেড়ে পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা, ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা এবং ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে গুচি মাছ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা কেজিতে।

আরও পড়ুনঃ  তীব্র তাপদাহে পুড়ছে পাবনা

এ সপ্তাহে বাজার ঘুরে দেখা যায় মুরগির বাজারেও একই অবস্থা। ব্রয়লার মুরগি ৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজিতে, সপ্তাহের চেয়ে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজিতে, অপরিবর্তিত রয়ে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪২০ টাকা কেজিতে।

নওগাঁ জেলার পোরশা থানার শুড়িপুকুর গ্রামের আব্দুল মতিন। স্ত্রীর চিকিৎসা করতে রাজশাহীতে এসেছেন। শনিবার সকালে নগরীর লক্ষ্মীপুর বাজারে গিয়েছিলেন মুরগি কিনতে। বাজারে দাম শুনেই যে অনেকটা আকাশ থেকে পড়ছে হয়েছে তাকে। আব্দুল মতিন বলেন, বাজারে এসেছিলাম বয়লার মুরগি কিনতে। দাম শুনে অবাক লাগছে। কেজিতে ৪০ টাকা বেড়েছে। বাজার খরচের হিসেব মিলানোই দায় হয়ে পড়েছে।

দামের প্রভাব পড়েছে ডিমের উপরেও। হালিতে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে লাল ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৬ টাকা।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন