শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাষ্টারপ্লান প্রণয়নের লক্ষে সৈয়দপুর

মাষ্টারপ্লান প্রণয়নের লক্ষে সৈয়দপুর
  • এমপি আদেলের উদ্যোগে ‘নগর উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কো-চেয়ারম্যান ও  নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-নীলফামারী) আসনের সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমানের ব্যবস্থাপনায় ‘নগর উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে সৈয়দপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টারে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের রাজশাহী বিভাগের সিনিয়র প্লানার ফখরুল ইসলাম।

সভায় বক্তব্য রাখেন, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোখছেদুল মোমিন, পৌর মেয়র রাফিকা আকতার জাহান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন, পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু ও সম্পাদক মোজাম্মেল হক, পৌর কাউন্সিলর জোবাইদুর রহমান শাহিন, পৌর কাউন্সিলর ও জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব শাহীন আকতার, পৌর কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা এরশাদ হোসেন পাপ্পু, স্থানীয় জাপানেতা ময়নুল কাজী, নীলফামারী চেম্বার অব কমার্সের সদস্য মোস্তফা ফিরোজ প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, সৈয়দপুরের উন্নয়ন করতে হলে রেলওয়ের ও পৌরসভার জমি সংক্রান্ত যে সমস্যা রয়েছে সবার আগে তার সমাধান করতে হবে। তারপর কার্যকর ও টেকসই ড্রেনেজ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ও স্থাপনা নির্মানে সরকারী নীতিমালার যথাযথ প্রতিপালন করতে হবে। তারপর শিশুপার্ক স্থাপন, বর্জ্য ডাম্পিং পয়েন্ট ও পানি শোধনাগার নির্মাণ জরুরী। এছাড়া সৈয়দপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামকে পূর্নাঙ্গ ও আন্তর্জাতিক মানের ভেনু হিসেবে দাঁড় করাতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনা অনুযায়ী সৈয়দপুর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক হলে এমনিতেই প্রয়োজনীয় নানা উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে। তাই সরকারের নীতিমালার আলোকে যদি ইকোনমিক জোন সৈয়দপুরে স্থাপনের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে সমুহ উন্নয়ন সাধিত হবে। এজন্য উদ্যোগ নেয়ার জন্য এমপি’র প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।

আরও পড়ুনঃ  রাজনৈতিক খোঁচাখুঁচির আর্থিক মূল্য নির্ধারণ করুণ

তারা আগামী সংসদ অধিবেশনেই এটিসহ সৈয়দপুরকে সিটিতে রুপান্তর ও রেলওয়ের ভুমি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে জোড়ালো প্রস্তাব উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতি আদায় করতঃ এব্যাপারে লেগে থেকে অনুমোদন করিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। সেইসাথে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ফাইলবন্দি সৈয়দপুর পৌরসভার মাস্টারপ্লান (মহাপরিকল্পনা) অনুমোদন করানোর অনুরোধ করেন। সৈয়দপুরের উন্নয়নে দল মত নির্বিশেষে সকলে সার্বিক সহযোগীতার আশ্বাস দেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

এর প্রেক্ষিতে এমপি আলহাজ্ব আহসান আদেলুর রহমান আদেল বলেন, সৈয়দপুর ঐতিহাসিক ভাবেই ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধ শহর। সুপরিকল্পিতভাবে প্রতিষ্ঠিত এই শহর অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন, আকর্ষণীয়, সুবিন্যস্ত হওয়ায় পাকিস্তান আমলে সিটি ছিল। স্বাধীনতা উত্তরকালে আমরা এর অবস্থান ধরে রাখতে পারিনি। যত্রতত্র আবাসন গড়ে যেমন ঘিঞ্জি নগরীতে পরিণত করা হয়েছে। তেমনি অপরিকল্পিতভাবে সরকারী বরাদ্দসহ ব্যক্তি উদ্যোগে যে উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে তা টেকসই ও নান্দনিক হয়নি।

তিনি আরও বলেন, জাপা’র প্রতিষ্ঠাতা পল্লী বন্ধু মরহুম এইচ এম এরশাদ এর আমলের পর কেউ সেভাবে পরিকল্পনা না নেয়ায় এবং নেতৃস্থানীয় রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী, সুশীল নাগরিকবৃন্দ ঠুনকো দলাদলি ও ব্যক্তি স্বার্থে দ্বন্দ্ব বিরোধ জিইয়ে রেখে ঐক্য প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করায় কাঙ্খিত উন্নয়ন সাধিত হয়নি। ফলে একটা হযবরল অবস্থায় নিপতিত সৈয়দপুর।

তবে এখনও ব্যাপক সম্ভাবনা ও সুযোগ আছে সৈয়দপুরকে ঢেলে সাজিয়ে একটা অত্যাধুনিক, শিল্পসমৃদ্ধ, দৃষ্টি নন্দন ও সকল নাগরিক সুবিধা সম্বলিত বসবাস উপযোগী শহর হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে সুদূরপ্রসারী ও যুগোপযোগী মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন একান্ত জরুরী। এলক্ষেই আজ আমার এই উদ্যোগ। সর্বস্তরের নাগরিক সমাজের ভাবনাগুলোর আলোকে সেই মহাপরিকল্পনা নেয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ  সিলেটে ধরা পড়লো সাড়ে ৪ মণের বাঘাইড়

এরই প্রথম আয়োজন আজ। এটি বাস্তবায়নের জন্য আপনাদের আন্তরিক সহযোগীতা প্রত্যাশা করছি। রাজনৈতিক ও ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধে উঠে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সকলের নিজ নিজ স্থান থেকে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাহলেই আমরা সফল হবো। আমাদের সৈয়দপুর শহরসহ পুরো উপজেলাকে মনের মত করে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো। এতে হারানো ঐতিহ্য ফেরানোর পাশাপাশি সুপরিকল্পিত শহরের মডেল হিসেবে সৈয়দপুরের অবস্থান সুসংহত করা যাবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন