শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ইতিহাস-ঐতিহ্য--

স্থাপত্যশৈলীর বিস্ময় শারজাহ মসজিদ

স্থাপত্যশৈলীর বিস্ময় শারজাহ মসজিদ

নির্মাণ ও স্থাপত্যশিল্পের এক অনন্য নিদর্শন শারজাহ মসজিদ। সংযুক্ত আরব আমিরাত চমৎকার স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ সুন্দর মসজিদের দেশ হিসাবে পরিচিত। অটোমান শৈলীতে ডিজাইন করা মসজিদটির স্থাপত্য সৌন্দর্য পর্যটকদের কাছে উপভোগ্য। আরব্য সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের বিস্তৃতি জানতে আমিরাতের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির মত অপরূপ মসজিদ, জাদুঘর ও লাইব্রেরিগুলো রহস্যপ্রেমী দার্শনিক ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে বরাবরের মতই জনপ্রিয়।

মসজিদটি আরব আমিরাতের শারজাহ্ প্রদেশের আমিরাত ও মালেহা সংযোগ সড়কের আল-তায় অঞ্চলে অবস্থিত। মাসজিদের মূল কাঠামো ও মাসজিদ কমপ্লেক্স এর নিপুন নির্মাণশৈলী মুসল্লি ও দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। প্রতিটি সুনিপুণ কারিগরি নকশায় আরবের মুসলিম সংস্কৃতির অনন্য নিদর্শন ফুটিয়ে তুলেছে স্থাপত্যকলার সার্থকতা।

৩শ মিলিয়ন দিরহাম ব্যায়ে নির্মিত মাসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে যা শেষ হয় ২০১৯ সালে। দীর্ঘ ৫ বছরের সুনিপুণ কারুকার্যে নির্মিত মাসজিদটি রমজানের প্রথম সপ্তাহে ১০ মে ২০১৯ সালে শারজাহ’র শাসক শেখ সুলতান বিন মুহাম্মদ আল-কাসেমি এর উদ্ভোদনের পাশাপাশি সেই রাতে ইশা ও তারাবির নামায আদায় করেন। মাসজিদটি নির্মাণে অর্থায়ন করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও নকশা প্রণয়ন করে শারজাহ ইসলামি ব্যাংক।

মাসজিদের মূল অংশের ভিতরে ও বাইরের দালান ও প্রকট সমূহে বিশ্ববিখ্যাত ক্যালিগ্রাফারদের পবিত্র কুরআনে কারিম এর নজর কাড়ানো ক্যালিগ্রাফ খচিত আছে। এর উল্লেখযোগ্য অংশ হলো কুরআনের আয়াত খচিত একটি স্বর্ণ ও একটি রৌপ্য মুদ্রা। বৃহৎ আকৃতির ঝাঁড়বাতি এবং মিহরাব মসজিদকে একটি দুর্দান্ত ঐতিহ্যগত ইসলামী স্থাপত্যের নান্দনিকতা এনে দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  সনিকে বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদনে কারখানা স্থাপনের আহ্বান

কালো গম্বুজ ও দুইতলা বিশিষ্ট এই মসজিদটি এর উদ্যান এবং কমপ্লেক্স এর নির্মাণশৈলী নিয়ে মোট ২ মিলিয়ন বর্গফুট বা ১ লক্ষ ৯০ হাজার বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে নির্মিত হয়েছে, এটি আমিরাতের সর্ববৃহৎ মাসজিদ সমূহের একটি। এতে একসঙ্গে প্রায় ২৫ হাজার মুসল্লি সম্মিলিত হয়ে নামাজ আদায় করতে পারে, এর অভ্যন্তরের ধারন ক্ষমতা ৫ হাজার এরও বেশি। মাসজিদটির মহিলাদের নামাজ আদায়েরস্থানে একসাথে ৬১০ জন মহিলা নামাজ আদায় করতে পারে এবং পাশের সংযুক্ত অংশের ধারণক্ষমতা ৬ হাজারেরও বেশি, এছাড়াও মাঠের বহিরঙ্গনে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার মুসল্লির ধারণক্ষমতা রয়েছে। মসজিদ কমপ্লেক্সের বিভিন্ন পার্কিংয়ে ২ হাজার ২ ‘শ  টিরও বেশি গাড়ি পার্ক করার স্থান ছাড়াও বয়স্ক দর্শনার্থীদের জন্য শতাধিক হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে।

মসজিদটি অমুসলিম দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ও তাদের যাতায়াতে জন্য আলাদা স্থান এবং পথ নির্ধারিত। মসজিদটিতে একটি বৃহৎ লাইব্রেরি রয়েছে যেখানে স্থান পেয়েছে ধর্মীয় গভেষনাপত্র, বিভিন্ন ভাষার কুরআনের তাফসির, হাদিসগ্রন্থ, ইলমূল ফিকাহ শাস্ত্রের বই সমূহ, মৌলিক ইসলাম রচনার ভাণ্ডার আমিরাত ও আরব ইতিহাস সম্বলিত পণ্ডুলিপি এর উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও মাসজিদে রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য একটি উন্মুক্ত যাদুঘর যাতে আরব ইতিহাসের বিভিন্ন নিদর্শন সংগৃহীত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন