শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আশ্রয়ণের ঘরে জুয়ার আড্ডা

আশ্রয়ণের ঘরে জুয়ার আড্ডা
  • অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভয়াশ্রম

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রামে আশ্রায়ণ প্রকল্পের একটি ঘর এখন অন্যায়-অবৈধ কার্যকলাপের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে প্রতিবেশীদের মাঝে বেশ অস্বস্তি ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানায়, ঘরটি বরাদ্দ পেয়েছেন ফারুক শেখ নামে এক ব্যক্তি। তার বাবা পার্শ্ববর্তী গোবিন্দপুর গ্রাম নিবাসী জিন্নাহ শেখ একজন প্রতিষ্ঠিত কৃষক। তিনি ২৫ থেকে ৩০ বিঘা কৃষি জমির মালিক। বাড়িতে তিন তলা ভিতের উপর একটি একতলা বিল্ডিং রয়েছে তার। এই স্বচ্ছল অবস্থা সম্পন্ন পরিবারের সন্তান ফারুকের দরিদ্রের ঘর পাওয়া নিয়ে এলাকায় বিতর্ক থাকলেও নতুন করে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে এর অপব্যবহার নিয়ে।

প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ঘরটি সারাদিন তালাবদ্ধ থাকে। সন্ধ্যায় ফারুক আসেন জলসার আসর বসাতে। এটি যেনো তার বাংলো বাড়ি! প্রায়শই ঘরটিতে বহিরাগত নারী-পুরুষের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। দরজা বন্ধ করে ঘরের ভিতরে তাস, জুয়া, নেশার আড্ডা চলে। সম্প্রতি এক রাতে ঘরটি থেকে এক নারীসহ ফারুক ও তার সহযোগীদের আটক করেন এলাকাবাসী। পরে ওই নারীকে তার অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হলেও কৌশলে লাপাত্তা হয়ে যান ফারুক ও তার সহযোগীরা।

প্রতিবেশী রিনা বেগম বলেন, আশ্রায়ণ প্রকল্পের এ ইউনিটে মোট চারটি ঘর রয়েছে। এর একটিতে ফারুক অপর তিনটিতে আমিসহ অন্যান্যরা বসবাস করছি। কিন্তু ফারুকের কারণে বর্তমানে আমাদের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। বহিরাগত নারী-পুরুষের আনাগোনায় লজ্জাস্কর অবস্থার মধ্যে থাকতে হয়। ঘরের ভিতর থেকে নিশাজাত দ্রব্যের গন্ধ ভেসে আসে। বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে থাকতে হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনে অগ্নিদগ্ধ-৯

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ফারুক শেখের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও তিনি এলাকায় না থাকায় এ ব্যাপারে ফারুকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. সেলিম মোল্লা ওই ঘর থেকে বহিরাগত নারী উদ্ধারের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ফারুকের কিছু ভুলত্রুটি আছে। এ নিয়ে আপনাদের কিছু করার দরকার নেই ভাই। নাম্বার দিয়ে যান ফারুককে যোগাযোগ করতে বলবানি।

এ বিষয়ে ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন নবাব বলেন, আমার এলাকা, কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবে এলাকার কেউ ফারুককে ভালো বলেনা- সেটা শোনা যায়। আপনারা আশপাশে খোঁজ নেন সব জানতে পারবেন।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম বলেন, কিছু অভিযোগের কথা শুনেছি। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ভূমিকে (এসিল্যান্ড) তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন