শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রেণিকক্ষ সংকটে ক্লাস চলছে বারান্দায়

শ্রেণিকক্ষ সংকটে ক্লাস চলছে বারান্দায়

শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শেরপুরের নকলা উপজেলার গড়েরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে সমস্যায় পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ প্রায় ১২০ জন শিক্ষার্থী। প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ না থাকায় শিক্ষকদের পাঠদান করতে হচ্ছে বিদ্যালয়ের বারান্দায়।

জানা গেছে, নকলা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের গড়েরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ছিল কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০১৩ সালে সরকার দুই কক্ষের পাকা ভবনের এই কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করণ করার পর আরও দুই কক্ষের আরেকটি পাকা ভবন নির্মাণ করেন। ইতিমধ্যে পুরোনো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং পাঠদানে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে । এরপর থেকেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিপাকে পড়েন শিক্ষকরা। বাধ্য হয়েই এখন তাদের পাঠদান করতে হচ্ছে বিদ্যালয়ের বারান্দায় বসিয়ে।

গড়েরগাঁও গ্রামের অভিভাবক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে গড়েরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে পড়ে । শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে এখানে পড়ালেখার মান নেমে গেছে। আশপাশে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় তাকে অন্য কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে পারছি না।

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তাওহীদ মিয়া বলেন, বারান্দায় ক্লাশ করলে অনেক রোদ লাগে। গরমে স্কুল ড্রেস ভিজে যায়। প্রায়ই ঠান্ডাকাশিতে কষ্ট পাই। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাইশা আক্তার কণিকা বলেন, বিদ্যুৎ চমকালে অনেক ভয় লাগে। দৌঁড়ে অন্য ক্লাসরুমের ভিতরে চলে যাই। বাতাসে বৃষ্টির পানি এসে শরীর ভিজিয়ে দেয়। মশা এসে অনেক কামড় দেয়।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পর থেকে দুই কক্ষের নতুন ভবনে পাঠদান চলছে। ভবনের সিঁড়িতে চলে অফিশিয়াল কাজকর্ম। প্রথম শিফটে চলে প্রাক প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান। দ্বিতীয় শিফটে পাঠদান চলে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির। কিন্তু শ্রেণিকক্ষের সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে দুই শিফটেই আমাদের বিদ্যালয়ের বারান্দায় পাঠদান করতে হচ্ছে। এতে শব্দদূষণ ও প্রচণ্ড রোদে শিক্ষার্থীদের বেশ কষ্ট হয়। এছাড়া ঝড়বৃষ্টির সময় পাঠদান ব্যাহত হয়। প্রতিবছর অনলাইনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিদ্যালয়ের এসব সমস্যার তথ্য জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনঃ  পার্সেলের বদলে মানুষ!

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি সম্প্রতি সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছি।

এ বিষয়ে নকলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফজিলাতুন নেছা বলেন, প্রতিবছর অনলাইনে বিদ্যালয়ের ভবন থেকে শুরু করে যাবতীয় তথ্য মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তারা সমস্যা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। স্থানীয়ভাবে আমাদের তেমন কিছু করার নেই।

নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়ে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন