শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-বেইজিং সমানে সমান

ঢাকা-বেইজিং সমানে সমান

আন্তর্জাতিক ফোরামে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন ও উন্নয়ন সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। একইসঙ্গে এক চীন নীতিতে বাংলাদেশ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। এতে ঢাকা-বেইজিং সমানে সমান প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলো। কেননা তাইওয়ান নিয়ে চীন এক চীন নীতি প্রচার করে আসছিল।

গতকাল রবিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে দেশের পক্ষে এ প্রতিশ্রুতি দেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের জানান। ওয়াং ইর বরাত দিয়ে ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীন বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাবে পূর্ব এশিয়ার দেশটি।

ওয়াং ই আরও বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়নেও চীন বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, ওয়াং ইর সঙ্গে আলোচনার সময় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য অতিরিক্ত বোঝা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সংকট সমাধানে চীনের সহযোগিতা চান।

জবাবে চীনের মন্ত্রী বলেন, তার দেশ আশা করে এই সংকট বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। এই ইস্যুতে যদি ত্রিপক্ষীয় হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে চীন ভূমিকা পালন করবে।

তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের অবস্থান প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ঢাকা ‘এক চীন নীতিতে’ বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ চীনের বন্ধুত্বকে মূল্য দেয়। কোভিড-১৯-এর সময় বাংলাদেশে এসে ফিরতে না পারা শিক্ষার্থীদের চীন যেতে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধও করেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুনঃ  রফতানি সম্ভাবনা ২৫ হাজার কোটি টাকার

তার এ সফরে চীনের সঙ্গে চারটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ৯৯ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধার ঘোষণাও দিয়েছে চীন।

গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন চীনা মন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক চীন নীতি’ আমরা পুনর্ব্যক্ত করেছি, এজন্য চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তাইওয়ান ইস্যুতে তারা আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মানার বিষয়টিতে জোর দিয়েছে। তারা আমাদের কাছে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে।

বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ অব্যাহতভাবে ‘এক চীন নীতি’ মেনে চলবে বলে গত বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

দুদিনের সফরে শনিবার (৬ আগস্ট) বিকেল ৫টায় ঢাকায় আসেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। বিমানবন্দর থেকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরের প্রথম কর্মসূচিতে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

সফরের দ্বিতীয় দিন সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের সঙ্গে  দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন ওয়াং ই। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে গতকাল সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে মঙ্গোলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন